Image credit Google
১ লা ফেব্রুয়ারি চারজনের ফাঁসি হবে ?
ভারতের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস গণধর্ষণ ও হত্যামামলায় মোট ছয় জন দোষী। একজন নাবালক থাকায় কিছুদিন সাজা খাটার পর ছাড়া পেয়ে যায়। ও আর এক অপরাধী রাম সিং তিহার জেলের ভিতরেই আত্মহত্যা করে। বাকি চারজনকে সুপ্রিমকোর্ট মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে. এরা হলো। রাম সিং এর ভাই মুকেশ সিং ,বিনয় শর্মা , পবন গুপ্তা ও অক্ষয় সিং ।

প্রায় সাত বছর মামলা চলার পর গত বছর ২২ শে ডিসেম্বর তাদের ফাঁসির দিন ঠিক হয়। কিন্তু সুপ্রিমকোর্ট ও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন নিবেদন ও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় তা পিছিয়ে যায়। দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট ১ লা ফেব্রুয়ারি ২০২০ সকল ৬ তাই নতুন ফাঁসির দিন ঠিক করে মৃত্যু পরোয়ানা দেন। কিন্তু আসামীরা দেশের আইনকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক আবেদন জানিয়ে যাচ্ছেন আজ পর্যন্ত। যে মামলা গুলো বা আবেদনগুলো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কবে হবে তা নিশ্চিত করে জানা যাচ্ছে না।
ফাঁসি কিভাবে হয় ? ফাঁসুড়ে কি করে ?
ফাঁসি দেওয়ার আগে ফাঁসি কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন ধরণের গুরুত্তপূর্ণ কাজ করতে হয় জল্লাদ কে।ফাঁসি কাঠের লিভারটি টানার পাশাপাশি আরও অনেক কাজ থাকে । আসামির মুখে কালো কাপড় পরিয়ে জল্লাদ তাকে গোপনে কিছু বলে? এই কথাগুলি শুনে আসামিও ঘাড় ঘুরিয়ে তার দিকে তাকায়। জল্লাদ মাথা নিচু করে দোষী ব্যক্তিকে বলে যেন সে তাকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য ক্ষমা করে দেয় । এতে তার কোনও হাত নেই। সে কেবল তার দায়িত্ব পালন করছে , যা সে উপর থেকে আদেশ পেয়েছে ।সে আরও ,বলে দুঃখিত বন্ধু, বিদায়, রাম-রাম, সালাম ইত্যাদি। সাধারণত এই শব্দগুলি দোষীকে তার ধর্ম অনুসারে বলা হয়।
প্রস্তুতি পর্ব
দীর্ঘদিন ধরে তিহার জেলে কর্মরত প্রাক্তন আধিকারিক জানিয়েছেন যে কোনও ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যত্ন সহকারে সম্পন্ন হয়। সেই সময়, কোন অপরাধির ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে সেটা মনে রাখা হয় না । সমস্ত কর্মকর্তা এবং কর্মচারী শুধু পরপর নিজের নিজের কাজটা নিখুঁত করে করে মন দেয় । সেখানে খুব কমই , প্রায় এক ডজন কর্মচারী থাকেন । নিরাপত্তা কর্মীরা অল্প দূরত্বে থাকেন । এই প্রক্রিয়াতে জল্লাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বেশ কয়েকটি দিন আগেই ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। ফাঁসির দিনই সবচেয়ে গুরুত্তপুর্ণ। সেটা সেটার জন্য সবাই প্রস্তুত থাকেন।

অন্তিম ক্ষণ
ফাঁসুড়ে যখন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মুখ একটি কালো কাপড় দিয়ে ঢাকেন তখন সে খুব ধীর গলায় একই সাথে এমন কিছু বলেন যা কোনও তৃতীয় ব্যক্তির কাছে পৌঁছায় না। জল্লাদ দোষীর মুখে কালো কাপড় পরিয়ে বলেন ,বলে ভাই, আমাকে ক্ষমা করে দিন। এতে আমার কোনও দোষ বা স্বার্থ নেই। আমি শুধু আমার কাজ করছি। এটি আমার দায়িত্ব, আমি এর জন্য বেতন পেয়েছি। প্রাক্তন কর্মকর্তার মতে, এর রিহার্সালও হয় । দোষীদের ধর্ম যাই হোক না কেন তাদের সেই অনুযায়ী কথা বলতে হয় ।
জল্লাদ যখন এই কথাগুলি উচ্চারণ করে তখন অপরাধী তার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। এই সময়টি খুব সংবেদনশীল। জল্লাদ তার পরে অপরাধীর গলায় ফাঁসির দড়ি পরিয়ে দিয়ে লিভারের সামনে এসে দাঁড়ায়। অর্ডার পাওয়ার সাথে সাথেই তিনি লিভারটি টানেন। অপরাধীর পায়ের তোলার পাটাতন সরে যায় এবং দেহটি ঝুলতে থাকে।
হ্যাঙ্গম্যান / জল্লাদ এর পারিশ্রমিক
যদি কোনও জল্লাদকে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়, তবে তাকে ফাঁসির জন্য পৃথক পারিশ্রমিকও দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, যে জল্লাদ ইন্দিরা গান্ধীর ঘাতককে ফাঁসি দিয়েছিলেন, তাকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। তিহার জেলখানায় নির্ভয়া মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার জনের ফাঁসি কার্যকর করতে কত টাকা দেওয়া হবে জলহাদ পবনকে তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি তবে যে টাকা সে পাবে তাই দিয়ে সে তার মেয়ের বিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে । পারিশ্রমিকের বিষয়টি জেল প্রশাসন নির্ধারণ করে। তবে জল্লাদের কাজ শুধু এটুকুই নয়। ফাঁসি কার্যকর করার পরে অপরাধীর দেহ নামানোর মতো আরও অনেক কিছুই করতে হয়।
No comments:
Post a Comment
Thank You .Please do not enter any spam link in the comment box.