Image credit Google
প্ৰধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কি দাবি করেছিলেন যে কয়েকদিনের মধ্যেই ধর্ষণকারীদের ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে ?
গত বুধবার গুজরাটে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবিষয়ে মুখ খোলার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বিতর্কটির সূত্রপাত সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের পোস্ট করা একটি টুইটকে কেন্দ্র করে যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, "এখন, অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়া হয় ৩ দিন, ৭ দিন, ১১ দিন এবং এক মাসের মধ্যে।"
কিন্তু আসলে হিন্দি ভাষায় ভাষণ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী মৃত্যুদণ্ড এবং ধর্ষণ মামলায় দ্রুত বিচারের বিষয়ে তার ইচ্ছা জানিয়েছিলেন।জানিয়েছিলেন ইদানিং এসবের বিচার দ্রুত করা হচ্ছে , তিনি এইধরনের ঘটনায় তার মনের তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেন । নিচের ভিডিওতে দেখুন প্রধানমন্ত্রী কি বললেন :
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে অযথা বিতর্ক
এএনআইয়ের টুইটের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে, নির্ভয়া মামলার ফাঁসি কখন হবে- এই নিয়ে অনেকে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন। কয়েক হাজারেরও বেশি লোক এই পোস্টে মন্তব্য করেছে।

এএনআইও মোদির বক্তৃতার এই বিশেষ অংশটিকে শিরোনামে টুইট করেছে - "ধর্ষণকারীদের এক মাসের মধ্যে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী।"
কি বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ? দেখুন -
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বাংলা অনুবাদ করলে জানা যাবে তিনি কি বলেছিলেন ( অনুবাদ আক্ষরিক নাও হতে পারে ): প্রধানমন্ত্রী বলেন "ধর্ষণ পূর্বেও হত। এটি সমাজের এমন এক মারাত্মক ঘটনা যে আমরা যখন এই ঘটনাগুলির কথা শুনি, তখন আমরা লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যায় । তবে আজ তার জন্য মৃত্যুর শাস্তি হয় .. ... ৩ দিনের মধ্যে, ৭ দিন, ১১ দিন বা এক মাসের মধ্যে ... একটু থেমে তিনি বলেন ... আমাদের মেয়েদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং ফলাফলগুলি চোখে দেখা যাচ্ছে
Video credit You Tube
... ধর্ষণের সাথে সম্পর্কিত সংবাদগুলি সত্যই দুর্ভাগ্যজনক , কিন্তু সেগুলো এক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকলেও ফাঁসির সংবাদ দ্রুত সংবাদ থেকে দূরে সরে যায়। মৃত্যুর দণ্ডের খবর যত দূরে ছড়িয়ে পড়বে , তত এই ধরণের অপরাধীদের মনে ভীতি জাগবে এবং সে এ ধরনের কাজ করার পূর্বে ৫০ বার চিন্তা করবে। "
ধর্ষণের মামলার দ্রুত বিচারের কয়েকটি ঘটনা
- জুলাই ২০১৮ সালে, মধ্য প্রদেশের কাটনিতে নিম্ন আদালত এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার জন্য মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল । এই বিচার কেবল পাঁচ দিন স্থায়ী হয়েছিল।
- মধ্য প্রদেশের মন্দাসৌর জেলায় নাবালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করার আরেক মামলায় নিম্ন আদালত দু'জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। ট্রায়ালটি ১৩ দিনের মধ্যে শেষ হয়েছিল।
- ধর্ষণের ঘটনায় শেষ ফাঁসি ১৫ বছর পূর্বে
- আর , ধর্ষণের আসামির আসল মৃত্যুদণ্ডের কথা যদি ধরা হয় , গত ১৫ বছরে এর মধ্যে একটি মাত্র ঘটনা ঘটেছে। পশ্চিম বাংলার ধনঞ্জয় চ্যাটার্জিকে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ২০০৪ সালে কলকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।
- প্রধানমন্ত্রী মোদীর শাসনকালে একটি মাত্র ফাঁসি কার্যকর হয়েছে এবং তা ছিল ২০১৫ সালের জুলাইয়ে সন্ত্রাসবাদী ইয়াকুব মেমনের।
১৬২ টি ফাঁসির আদেশ এখনও কার্যকর হয়নি
আদালত কর্তৃক প্রদত্ত মৃত্যুদণ্ড এবং প্রকৃত ফাঁসির মধ্যে একটি দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া এবং একটি বিশাল ব্যবধান রয়েছে।
প্রজেক্ট ৩৯ এ অনুসারে , ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটি-দিল্লির করা এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গত বছর আদালত কর্তৃক প্রদত্ত মৃত্যুদণ্ডের পরিমাণ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিচারে আদালত এখনো পর্যন্ত ১৬২ জন দোষীকে মৃত্যদণ্ড দিয়েছে।
এখন আইন কি আরও কঠোর ?
গত বছর ধর্ষণ আইনটিকে আরও কঠোর করার জন্য মোদী সরকার আইন পাস করেছিল। এটি ধর্ষণের মামলায় দ্রুত বিচার ও নাবালিকাকে ধর্ষণ করলে তার কঠোর শাস্তি প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়।
No comments:
Post a Comment
Thank You .Please do not enter any spam link in the comment box.