Image credit Google
কেন্দ্রীয় উদ্যোগ - স্থগিতাদেশ কে চ্যালেঞ্জ দিল্লী হাই কোর্টে
নির্ভয়া মামলায় দেশের মানুষের দাবি মেনে নড়েচড়ে বসল কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রক। জরুরী ভিত্তিতে ফাঁসি কার্যকর করার জন্য আজ দিল্লী হাইকোর্টে ফাঁসির স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করে কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লী পাতিয়ালা হাউস কোর্ট এর আগে এই মামলায় ১ লা ফেব্রুয়ারি যে ফাঁসির দিন নির্ধারিত ছিল তার উপর স্থাগিতাদেশ দিয়েছিল গত ৩১ শে জানুয়ারী। সেই রায়কেই আজ চ্যালেঞ্জ জানাল কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় যুক্তি ১- আসামিদের ইচ্ছাকৃত বিলম্ব কৌশল
- আজ দিল্লী হাইকোর্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষে উপস্থিত সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দেখিয়েছেন যে এই চার আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করার চেষ্টা করেছেন। তুষার মেহতা বলেন যে দোষী পবন গুপ্ত প্রাণভিক্ষা এবং করুণার আবেদন দায়ের না করে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করার চেষ্টা করেছেন।তার নিকট যথেষ্ট সময় ছিল এই আবেদনগুলি দায়ের করার। এখন তার আর সময় পাওয়া উচিত নয়।
কেন্দ্রীয় যুক্তি ২- একজন বাদে বাকিদের ফাঁসিতে বাধা নেই
- সলিসিটার জেনারেল দিল্লী হাইকোর্টের সামনে যুক্তি দিয়েছিলেন যে যদি প্রাণভিক্ষার আবেদন মুলতুবি থাকে, তবে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে বিলম্ব হবে কেবল সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে যার প্রাণভিক্ষার আবেদন মুলতুবি রয়েছে - অন্যদের জন্য সেই নিয়ম খাটে না । সলিসিটার জেনারেল যুক্তি দিয়েছেন, "সুপ্রিম কোর্টের কাছে আপিল বিচারাধীন থাকাকালীন কেবল মাত্র নির্দিষ্ট সেই অপরাধীর ফাঁসি বিলম্ব করা যেতে পারে।
কেন্দ্রীয় যুক্তি ৩ - একই অপরাধে পৃথক ব্যক্তির শাস্তি বিভিন্ন রকম হতেই পারে - দিনও আলাদা হতে পারে
- সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সরকারে পক্ষ থেকে আরো বলেন যে , দিল্লী পাতিয়ালা হাউস কোর্ট আসল নিয়মটি বুঝতে বা পড়তে ভুল করেছেন।

- যে যুক্তিতে ফাঁসি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে , যে একই অপরাধে দুষ্ট একাধিক অপরাধীর শাস্তি একই দিনে কার্যকর করতে হবে - সেই নিয়ম এক্ষেত্রে খাতে না। কারণ পৃথক পৃথক অপরাধী বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে পারে , এবং আলাদা আলাদা অপরাধীর অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত একেকজনের ক্ষেত্রে এক এক রকম হতেই পারে। যাদের প্রাণভিক্ষা রাষ্ট্রপতি ইতিমধ্যেই খারিজ করে দিয়েছেন তাদের ফাঁসি দিতে কোনো বাধা থাকবে ? তিনি আরো জানান যে , অপরাধী মুকেশ ঠিক এই সুবিধাটিই পেয়ে যাচ্ছে। তার এবং যাদের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে তারা অন্যের আবেদনের বিলম্বের সুবিধা ভোগ করছে।
কেন্দ্রীয় যুক্তি ৪-এরকম চললে কোনোদিন কাউকেই ফাঁসি দেওয়া যাবে না
- তিনি আরো সওয়াল করেন যে "পবন গুপ্তের দুটি সমান্তরাল বিচার একসাথে চলছে। সে ২০১৭ সালে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার ২২৫ দিন পর পুনর্বিবেচনার আবেদনটি দায়ের করেছিল। প্রতিকারমূলক বা প্রাণভিক্ষার আবেদন এখনও দায়ের করেনি । এবং যদি সে প্রাণভিক্ষার আবেদন দায়ের না-ই করে তাহলে " তার কাছে আইনি বিকল্প অবশিষ্ট আছে " এই নিয়মে তাকে কোনোদিন ফাঁসিই দেওয়া যাবেনা এবং তার সাথে "সব অপরাধীকে একসঙ্গে ফাঁসি দিতে হবে" নিয়মের জন্য যেহেতু পবনের ফাঁসি হবেনা তাই অন্য্ কোনো অপরাধীর ফাঁসি দেওয়া যাবে না।
কেন্দ্রীয় যুক্তি ৫ -ইচ্ছাকৃত বিলম্বের চেষ্টা বনাম বিচার ব্যবস্থার সম্পূর্ণ সহযোগিতা
- সলিসিটর জেনারেল মেহতা তাঁর সাওয়ালে বলেন যে - আসামীরা দিনের পর দিন ইচ্ছাকৃত ভাবে ফাঁসি পিছোনোর জন্য আবেদন করতে বিলম্ব ঘটিয়েছে আর তার অন্য দিকে বিচার ব্যবস্থা তাদের সব আবেদনের জরুরি ভিত্তিতে প্রতিকার করেছে।
কেন্দ্রীয় যুক্তি ৬ - মৃত্যদন্ড ঘোষণার থেকে ৯০ দিন পার হয়েছে বহুদিন - কোনো নিয়ম-ই আর ফাঁসি দেওয়াকে আটকাতে পারেনা
- তিনি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন যে "যদি কোনও আসামি ফাঁসি ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করে থাকে তবে তার ফাঁসি বা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে কেউ আটকাতে পারে না ," এই কেসে আসামিরা ইতিমধ্যেই সমস্ত সময় সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় যুক্তি ৭ - সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ পেলেই ফাঁসি
- কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল যুক্তি দেন যে একবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি পেলে আসামিদের আলাদা দিনে মৃত্যদণ্ড দেওয়া যেতে পারে ।

বিচারকের প্রশ্ন -
বিচারক জিজ্ঞাসা করেন যে , যদি বিভিন্ন তারিখে চারটি প্রাণভিক্ষার আবেদনের করা হয়ে থাকে এবং দুজনের আবেদন খারিজ করা হয় ও দু'টি মুলতুবি হয়ে থাকে, তবে কি হবে?
কেন্দ্রের জবাব
কেন্দ্র জবাব দেয় যে এই জাতীয় ক্ষেত্রে দু'জনকে ফাঁসি দেওয়া যেতে পারে এবং অন্য দু'জন অপেক্ষা করতে পারে।
আজ বিচারক কি নির্দেশ দিলেন ?
গত শনিবার এই আবেদনের পরে দিল্লি হাইকোর্ট চার দোষী, মুকেশ কুমার, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত এবং অক্ষয় সিংয়ের কাছ থেকে জবাব চেয়েছিলেন।আজ আদালত , ডিজি (জেল) ও তিহার জেল কর্তৃপক্ষকেও নোটিশ জারি করে কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদনের বিষয়ে তাদের অবস্থান জানতে চেয়েছে।
খবর সূত্র :- ইন্ডিয়া টুডে , ইউ এন আই ও পিটিআই
No comments:
Post a Comment
Thank You .Please do not enter any spam link in the comment box.