Image credit Google
আদালতের ভিতর কি হয়েছিল
অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে গেল কলকাতা ব্যাঙ্কশাল আদালতের ভিতরে।কোর্ট রুমে বিচারের শুনানী চলাকালীন খোদ বিচারককেই জুতো ছুঁড়ে মারল আইএস জঙ্গী সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া মহম্মদ মাসুরুদ্দিন , ওরফ মুসা। বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে পৌনে একটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের এজলাসে । মহামান্য বিচারপতিকে জুতো ছুড়ে সে চিৎকার করে বলতে থাকে যে তার বিচার করার অধিকার বিচারকের নেই।
তবে বিচারককে উদ্দেশ্য করে জুতো ছুড়লেও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারকের গায়ে তা লাগেনি। সেই জুতোটি জুতো গিয়ে লাগে একজন আইনজীবীর কানে। আহত হন ওই আইনজীবী। এরপর সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা ছুটে আসে এবং আসামীকে লকআপে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুর্ধর্ষ আইএস জঙ্গী মুশা
মহম্মদ মাসুরুদ্দিন বা মুশাকে কে রাজ্যের সিআইডি ২০১৬ সালের ৬ জুলাই বর্ধমান স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে। তার আসল বাড়ি বীরভূমে। কিন্তু সে তার স্ত্রী ও এক শিশু সন্তানকে নিয়ে চেন্নাই এর তিরুপুরে থাকতো। সেখানে সে একটি সবজির দোকান চালাত।চেন্নাই থেকে বীরভূমে বাড়ি ফেরার পথে বর্ধমান স্টেশনে গোপনসূত্রে খবর পেয়ে সিআইডি তাকে আটক করে। তখন তার কাছ থেকে একটি ধারাল অস্ত্র , একটি বন্দুক , ছটি সিম কার্ড ও দুটি জাল ভোটার আইডি কার্ড উদ্ধার করে সিআইডি। জানা যায় যে সে চেন্নাইতে থেকে জঙ্গি সংগঠন আইএস এর হয়ে কাজ করতো ও তাদের হয়ে জঙ্গি রিক্রুট করত। তৎকালীন সিআইডি সূত্রে আরও জানা যায় যে সে উন্নত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সিরিয়া , আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশে আইএস এর বিভিন্ন লোকেদের সাথে কথা বলত। তার কল ট্র্যাক করে গোয়েন্দারা এই তথ্য হাতে পান। মুশা কোড ল্যাঙ্গুয়েজে মেসেজ লিখতো। সিআইডি , আই বি ,ও এনআইএ মিলে এই তদন্ত সম্পন্ন করে। মুসাকে গ্রেপ্তার করা সিআইডি -র এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।
জেলের ভিতরেই কারারক্ষীর উপর আক্রমণ
Image credit Google
বিচার চলাকালীন এর আগেও মুসা ২০১৭ সালে আলিপুর জেলের এক কারারক্ষীকে গলা টিমে মারার চেষ্টা করেছিল । সেই ঘটনার পর তাকে আলিপুর জেল থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও সে ২০১৯ সালে এক কারারক্ষীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে। সেই কারারক্ষীর গলা কেটে দেয় সে ।সপ্তাহখানেক আগেই সে আদালতে জেলে খেতে দেওয়া রুটি পকেটে নিয়ে এসেছিল । তার উদ্দেশ্য ছিল বিচারককে জেলের খাবারের ম্যান দেখানো।
জেলেই ভিডিও কনফারেন্স এ শুনানির আবেদন জাল কর্তৃপক্ষের
জেল সূত্রে আদালতে জানান হয় যে মুশা ক্রমশ উগ্র ও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। সারাক্ষণ তার উপর নজর রাখা হয়। সেলের বাইরে প্রায় বার ই করা হয়না। সাথে মুসা এর আগে এএকাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছে যে সবসময় নাকি তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় শুধু প্রাকৃতিক কৰ্ম করার সময় বাদে। তার হাতেও এমন ভাবে বেড়ি পড়ান থাকে যে সে ঠিক করে খেতে পারেনা। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন যে সে মিথ্যা বলছে।
Image credit Google
একই সঙ্গে জানা গিয়েছে যে , এই রকম দুর্ধর্ষ বন্দীকে জেল থেকে আদালতে নিয়ে আসা বিপজ্জনক বলে জেল কর্তৃপক্ষ আদালতে আজ একটি পিটিশন দায়ের করেছে যাতে এই বন্দীর ক্ষেত্রে অন্য্ অনেক কুখ্যাত বন্দীর ন্যায় ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে শুনানি করা যায়। সেক্ষেত্রে তাকে জেল থেকে আদালত পর্যন্ত নিয়ে আসার ঝুঁকি নিতে হবে না। আদালত এ ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেন তা এখনও জানা যায় নি।
No comments:
Post a Comment
Thank You .Please do not enter any spam link in the comment box.