Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

মুঘলদের পথের কাঁটা বাংলার রাজা প্রতাপাদিত্য: বাংলার মুক্তি সংগ্রাম ও প্রাসঙ্গিকতা - ধারাবাহিক নিবন্ধ ( পর্ব- ১ ) , স্বামী আত্মযোগানন্দ

 রাজা প্রতাপাদিত্য: বাংলার সূর্যসেনানী :  ধারাবাহিক নিবন্ধ ( পর্ব- ১ )

লেখক - স্বামী আত্মযোগানন্দ 

  • এক হারিয়ে যাওয়া বীরত্বের ইতিহাস, এক চেতনার পুনর্জাগরণ।
  • বাংলার সীমান্তে যখন অশুভ শক্তি হানা দিচ্ছে, তখন প্রয়োজন প্রতাপাদিত্যের মতো নেতৃত্ব।
  • এই ইতিহাস জানুন—নিজেকে চিনুন, বাংলাকে বাঁচান।



রাজ্ প্রতাপাদিত্যের প্রাসঙ্গিকতা  ও বর্তমান বাংলার অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম
দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে  প্রতিরোধে রাজা প্রতাপাদিত্যের উত্তরসূরি 

এই সিরিজটি শুধুমাত্র একটি বীর রাজপুরুষের কাহিনি নয়—এটি বাংলার এক হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের পুনর্জাগরণ, এটি বাংলার মাটিতে হিন্দু চেতনার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পদধ্বনি।

রাজা প্রতাপাদিত্য ছিলেন এক ঐতিহাসিক যোদ্ধা—অপরাজেয়, আত্মমর্যাদাশীল, এবং হিন্দু সভ্যতা রক্ষার এক অনন্য প্রতীক। তিনি কেবল যশোর-সুন্দরবনের রাজা নন, ছিলেন অখণ্ড বাংলার স্বাধীন হিন্দু শাসক, যিনি মোগল আক্রমণের বিরুদ্ধে তলোয়ার তুলে নিয়েছিলেন, পবিত্র পুরীধামের রক্ষা করেছিলেন, বারাণসীতে ৬৪ যোগিনী ঘাট নির্মাণ করে হিন্দু ধর্মের পুনরুজ্জীবনে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। মোগল সেনাপতি মান সিংহের নেতৃত্বে আগত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে টাকী তে (উত্তর ২৪ পরগনা) তাঁর যুদ্ধ ছিল তাঁর জীবনের শেষ কিন্তু গর্বময় অধ্যায়।

প্রাসঙ্গিকতা : বর্তমান বাংলার বুকে ভয়ঙ্কর জেহাদি আগ্রাসন 

আজকের এই সময়েও তাঁর উত্তরসূরি  শ্রী প্রবীর রায় চৌধুরি—একজন সমাজসেবক, শিক্ষক, সাংবাদিক ও লেখক, যিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন মানুষের সেবায়। প্রবীরবাবু শুধুমাত্র দায়িত্বেই নয়, সাহসিকতা, সততা ও মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই নিজের পরিচয় গড়েছেন।সামাজিক অন্যায় , অত্যাচার , লুটপাঠ , দখল এসবের বিরুদ্ধে থেকে লড়াই ও তার ফলে সামগ্রিক বসিরহাট মহকুমা - সে সুদূর সুন্দরবন , সন্দেশখালি থেকে টাকি , বসিরহাট ছাড়িয়ে তার  উত্তুঙ্গ জনপ্রিয়তা দুষ্কৃতীদের সহ্য হলোনা।মহামারীর সুযোগ নিয়ে লুন্ঠিত হলো সবকিছু।কিন্তু তার কথায় এলড়াই  চলবে।   

 টাকীর গৌরবময় ইতিহাস ও বর্তমানের ভয়ঙ্কর বাস্তবতা 

তাঁর পূর্বপুরুষ পিতামহ রায় শচীন্দ্র নাথ চৌধুরি ছিলেন টাকির শেষ জমিদার, একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ সহচর। তাঁর উদ্যোগেই ১৮২৯ সালে টাকিতে স্থাপিত হয় Taki Government School, প্রতিষ্ঠিত হয় Taki Hospital, এবং ১৮৫১ সালে গড়ে ওঠে বাংলার প্রথম কন্যা বিদ্যালয়, যা ছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নারীশিক্ষা আন্দোলনেরও বহু আগে।তার আরেক ভাই রায় হরেন্দ্রনাথ চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করে টাকী সরকারি কলেজ , তিনি ছিলেন স্বাধীন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধান রায় মন্ত্রিসভার প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। কয়েকবছর আগেও টাকীকে বলা হতো শিক্ষা ও সঙ্গস্কৃতির তীর্থক্ষেত্র - অসংখ্য স্কুল , সরকারি কলেজ , নাট্য কেন্দ্র ছিল তার ঐতিহ্য ও অহংকার। কিন্তু আজ, সেই গৌরবময় রাজপরিবারের ধ্বংসস্তূপের উপর দাঁড়িয়ে প্রবীরবাবু একা হাতে লড়ছেন এক ভয়ংকর বাস্তবতার বিরুদ্ধে।

প্রবীর রায় চৌধুরি

ভাঙা হয়েছে একের পর এক দুর্গা দালান , দখল হয়েছে কালী মন্দির। 
জমি মাফিয়া ও বাংলাদেশি জিহাদি অনুপ্রবেশকারীদের দখলে

টাকি, যা ভারতের সীমান্ত শহর এবং যেখান দিয়ে বয়ে চলেছে ইছামতি নদী, একদিকে রয়েছে ভারত, আর একদিকে বাংলাদেশ। বর্তমানে এই অঞ্চলটি জমি মাফিয়া ও বাংলাদেশি জিহাদি অনুপ্রবেশকারীদের দখলে চলে যাচ্ছে। তাঁরা দখল করে নিচ্ছে রাজপরিবারের শত বছরের সম্পত্তি, নির্মাণ করছে অবৈধ হোটেল-বার, চালাচ্ছে অবৈধ কারবার ও সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ। প্রবীর রায় চৌধুরি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, বারংবার তাঁর উপর আক্রমণ হয়েছে, তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা হয়েছে, এমনকি তাঁর নিজস্ব অফিস ও বাসভবন পর্যন্ত দখল করে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি একটি বারের জন্যও মাথা নত করেননি।

তিনি মনে করেন, আজকের দুঃসময়ে, যখন পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সমাজ নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে, তখন প্রয়োজন একজন প্রতাপাদিত্য—প্রয়োজন সেই রাজচেতনার, যা নিজের মাতৃভূমি, ধর্ম ও সংস্কৃতির জন্য জীবন দিতে দ্বিধা করে না।

এই চেতনা জাগানোর জন্যই তিনি এই ধারাবাহিক সিরিজ শুরু করেছেন—"রাজা প্রতাপাদিত্য: বাংলার সূর্যসেনানী"। ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায়, প্রতিটি বীরত্বের মুহূর্ত—আজ বাংলার মানুষকে নতুন করে স্মরণ করানো দরকার। কারণ ইতিহাস জানলে তবেই আত্মপরিচয় গড়ে ওঠে, আত্মপরিচয় থাকলে তবেই শুরু হয় প্রতিরোধ।

Kula Devi of Raj Pratapaditya

PM Modi offers prayers at Jeshoreshwari Kali Temple in Bangladesh

রাজা প্রতাপাদিত্য: বাংলার সূর্যসেনানী ও মোগল বিরোধী বীর

এক সময় ছিল, যখন সমগ্র ভারত মোগল সাম্রাজ্যের ছায়ায় ঢেকে যাচ্ছিল। দিল্লির সিংহাসনে তখন সম্রাট আকবর, আর তার অন্যতম বিশ্বাসভাজন সেনাপতি মান সিংহ বাংলার দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন—উদ্দেশ্য, বাংলাকে পুরোপুরি মোগল শাসনের অধীনে আনা। তখনই ইতিহাসের মঞ্চে প্রবেশ করেন এক অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত রাজা—প্রতাপাদিত্য।

এক সাহসী রাজা, বাংলার হারিয়ে যাওয়া অহংকার

রাজা প্রতাপাদিত্যকে আজ অনেকে কেবল "ভূঁইয়া" বলে ক্ষুদ্র করে দেখানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, তিনি ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন রাজার প্রতীক। তিনি হার মানেননি, নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দেননি, বরং ধর্ম, সংস্কৃতি ও স্বাধীনতার জন্য মরণপণ লড়াই করেছেন।

আজ যখন হিন্দু সমাজ বারংবার আক্রান্ত, বাংলার ঐতিহ্য প্রশ্নের সম্মুখীন, তখন এই ইতিহাস আমাদের বলে—"প্রতাপাদিত্যর মতো সাহসী পুরুষের প্রয়োজন ছিল, এখনো আছে।"

তিনি ছিলেন বাংলার রাজা , মুঘল শাসিত ভারতে তিনি ছিলেন এক স্বাধীন রাজার মতোই আত্মপ্রত্যয়ী, গর্বিত ও হিন্দু ধর্ম ও বাংলার সংস্কৃতির এক অসীম রক্ষাকর্তা।


 King Pratapaditya's palace at Shyamnagar, Satkhira, Bangladesh.


টাকির যুদ্ধ: মোগল সেনাপতি মান সিংহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ

মান সিংহ যখন বাংলায় আগ্রাসন শুরু করেন, সেই সময়ে অধিকাংশ স্থানীয় রাজা ভয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন। অনেকেই আত্মসমর্পণ করেছিলেন বা সন্ধিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু প্রতাপাদিত্য ছিলেন ব্যতিক্রম। টাকী , আজকের উত্তর ২৪ পরগণার এক অঞ্চল—সেইখানে মোগল বাহিনীর বিরুদ্ধে তিনি এক তীব্র ও রক্তক্ষয়ী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

প্রতাপাদিত্য জানতেন, মোগলদের বাহিনী বিশাল এবং আধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত। কিন্তু তার ছিল অন্যরকম এক শক্তি—নিজের ভূমির প্রতি ভালোবাসা, নিজের প্রজাদের প্রতি দায়িত্ব এবং হিন্দু ধর্মের জন্য আত্মবলিদানের প্রস্তুতি।

৬৪ যোগিনী ঘাট নির্মাণ: কাশীতে তার অপরূপ দান



রাজা প্রতাপাদিত্য কেবল এক যোদ্ধা ছিলেন না, ছিলেন এক মহাদাতা, এক সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকও। তারই অনুপ্রেরণায় কাশীতে প্রতিষ্ঠিত হয় "চৌষট্টি যোগিনী ঘাট", যেটি আজও বারাণসীর গঙ্গাতীরে ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে। ঘাটটির নির্মাণ কেবল ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নয়, এটি ছিল নারীত্বের শক্তির প্রতি তার শ্রদ্ধার এক প্রতীক। ৬৪ যোগিনী—তন্ত্রের শক্তির প্রতীক—তার পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে পূজিত হতে লাগল।

"ফেরার সময় নাও নামিয়ে দিল চৌষট্টি যোগিনী ঘাটে। লোকাল মানুষ অবশ্য বলে - চৌষট ঘাট।

কাশীর বিখ্যাত খাড়া সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলাম বাংলার বীর সন্তান, যশোররাজ প্রতাপাদিত্য স্থাপিত চৌষট্টি যোগিনী ও ভদ্রকালী মন্দিরে। মারকাটারি ভিড়ের বাজারেও শুনশান। অথচ শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে এই ভিড়ের অর্ধেকই বাঙালি।
একটি চৌকো দালানের দুপাশে দুই দেবীর দুটি মন্দির, দুর্গা আর কালী।
প্রথম যুগে দেবী দুর্গার মূর্তিটিকে ঘিরে থাকতেন চৌষট্টি যোগিনী; এখন অবশ্য তাঁরা আর কেউ নেই।
নবীনেরা মনে করতে পারে না, তবে প্রবীণরা বললেন, সেই মূর্তিগুলোর কিছু ভেঙে গেছিল, কিছু চুরি গেছিল।
অগত্যা একলা হয়ে গেছেন মা দুর্গা।
অম্বরের রাজা মান সিংয়ের কেল্লায় যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের কুলদেবী যশোরেশ্বরীকে দেখে এসেছি সদ্য।
মোগলদের রাজপুত সেনাপতি - মান সিং, আরাধ্য দেবী সমেত পরাজিত প্রতাপরাজাকে খাঁচায় ভরে নিয়ে চলেছিলেন দিল্লী, বাদশার পায়ের তলে উপহার দেওয়ার জন্য।
কিন্তু সে দুর্লভ সুখ মান সিংহের কপালে ছিল কই? গৌরবের দিনে ভক্তিভরে প্রতিষ্ঠিতা মা দুর্গা আর ভদ্রকালী বোধহয় দয়া করলেন; খাঁচাবন্দী রাজা প্রতাপ কাশীতেই দেহ রাখলেন, আর অপমান সইতে হল না... পড়ে রইলো তাঁর গড়া ঘাট, মন্দির...
বর্তমানে অবশ্য বাঙ্গালীর উদাসীনতার জন্য সে সব গৌরবময় ইতিহাস সবাই ভুলতে বসেছে। উল্টে আমাদের জ্ঞান দেওয়া হল, এসব স্বয়ম্ভূ দেবতা।
পুরোহিত গিন্নী দাপটের সঙ্গে কাগজ এগিয়ে ধরে, 'লিফলেট মে দেখ লো!'
'আচ্ছা!! বাঙ্গালীর বানানো সবকিছু রাতারাতি স্বয়ম্ভূ হয়ে যায়, তাই না? দোরের বাইরে পাথরে বুঝি মিথ্যে কথা লেখা আছে?' তাড়া খেয়ে পুরুতগিন্নী পালানোর পথ পায় না...
সারা মন্দির জুড়ে অসংখ্য শ্বেতপাথরের ফলক, বাংলার বিভিন্ন জেলার সুসন্তানদের বাপ-মায়ের পূণ্যস্মৃতির উদ্দেশ্যে... বুকে ভরা কত স্মৃতি... সবই অবশ্য অনেক দিন আগের... সেই তখনকার, যখন বাঙালি তাঁর ইতিহাস জানতো... বাঙালিত্ব নিয়ে গর্ব করতে জানতো...
©কেকা বসু দেব
আপনাদের জন্য রইল প্রতাপরাজার ঘাট, মন্দির আর কাশীর কিছু ছবি। কখনো গেলে একবারটি এই মন্দিরের সামনে এসে দাঁড়াবেন। দাঁড়াবেন হনুমান ঘাটে, যেখানে শ্রী চৈতন্যের সঙ্গে সনাতন গোস্বামীর প্রথম দেখা হয়েছিল; তৈরি হয়েছিল আধুনিক বৃন্দাবনের ব্লু প্রিন্ট, ডিভাইন ট্যুরিজমের সর্বপ্রাচীন নিদর্শন... দাঁড়াবেন আনন্দময়ী মায়ের ঘাটে, বাংলার যে আটপৌরে গৃহবধুর সামনে মাথা নত করতেন ভারতেশ্বরী ইন্দিরা গান্ধী স্বয়ং...
গ্যারান্টি দিচ্ছি, গর্বে হাইট দু ইঞ্চি আর বুকের ছাতি ছ ইঞ্চি বেড়ে যাবে।"- এই অংশটি সংগৃহিত কেক বসু দেব (Keka Basu Dev) এর ফেসবুক লেখা থেকে

মুঘলদের পরাজিত করে পুরী জগন্নাথ মন্দির রক্ষা: ইতিহাসের এক অকথিত অধ্যায় -রাজা প্রতাপাদিত্য

মোগল শাসনের সময় বহু হিন্দু মন্দির ধ্বংস বা অপবিত্র করা হয়েছিল। তবে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ইতিহাস অন্যরকম। কথিত আছে, এক সময় মোগল বাহিনী যখন মন্দির আক্রমণের পরিকল্পনা করছিল, তখন প্রতাপাদিত্য গোপনে এক বাহিনী পাঠিয়ে মন্দিরের রক্ষার ব্যবস্থা করেন। তার এই প্রচেষ্টা অনেকটা পর্দার আড়ালে হলেও, পুরীর পাণ্ডারা আজও তার এই দান ও রক্ষাকর্ম স্মরণ করেন।



Pratapnagar is a village in southwest part of Bangladesh near Sundarban in Assasuni Thana, Satkhira Where a monument still stands to declare the Might of Paratapaditya against Mughals.


এই তো সেই সূর্যসেনানী- ইতিহাস শুধু স্মরণ নয়, দিশা হয়ে উঠবে

প্রতাপাদিত্যর নাম আজ কালের অতলে হারিয়ে যেতে বসেছে, কিন্তু যারা বাংলার প্রকৃত ইতিহাস ভালোবাসেন, তাদের জন্য তিনি চিরকালই রয়ে যাবেন এক অগ্নিযুগের প্রতীক হিসেবে। তার বীরত্বের কাহিনি যেন নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করে, সাহস যোগায়, সে আমাদের এই ধারাবাহিক লেখার উদ্দেশ্য।

তিনি ছিলেন বাংলার সূর্যসেনানী—যিনি আলো ছড়িয়েছিলেন সাহসের, আত্মমর্যাদার ও হিন্দু ঐতিহ্যের। আজকের পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপটে, যেখানে হিন্দু সমাজ দিন দিন নানা সংকট, ষড়যন্ত্র ও অস্তিত্বের প্রশ্নের মুখোমুখি—সেখানে রাজা প্রতাপাদিত্য কেবল এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, বরং হয়ে উঠতে পারেন এক প্রেরণা ও প্রতিরোধের প্রতীক।

যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও হিন্দুরা রাজনৈতিকভাবে নিঃসঙ্গ, সাংস্কৃতিকভাবে কোণঠাসা এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে অনিশ্চিত, তখন ইতিহাসের এই রক্তমাখা পৃষ্ঠায় দাঁড়িয়ে আমরা বুঝি—আমাদের প্রয়োজন একজন প্রতাপাদিত্যর মতো নেতৃত্ব। যিনি আপস নয়, আত্মরক্ষার কথা বলতেন। যিনি সাময়িক শান্তির মোহে আত্মসমর্পণ করতেন না, বরং দীর্ঘমেয়াদী আত্মমর্যাদার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়তেন।


প্রয়োজন বাংলায় হিন্দু সম্মিলনী, পুনর্জাগরণ ও সাহসিকতার এক নতুন অধ্যায়

প্রতাপাদিত্যর মতো নেতার প্রয়োজন আজ এই কারণে নয় যে, আমরা যুদ্ধ চাই; বরং এই কারণে যে, আমরা আত্মপরিচয় হারাতে চাই না। তিনি যেমন হিন্দু সমাজের ধর্মীয় কেন্দ্র, সংস্কৃতির ঐতিহ্য এবং নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতেন, আজকের প্রজন্মেরও সেই আত্মস্মরণ জরুরি—কারা আমরা, কোথা থেকে এসেছি, এবং কোন মাটিতে দাঁড়িয়ে আমাদের ভবিষ্যত গড়া উচিত।

রাজা প্রতাপাদিত্যের মতো নেতার প্রয়োজন বাংলায় হিন্দু সম্মিলনী, পুনর্জাগরণ ও সাহসিকতার এক নতুন অধ্যায় লেখার জন্য। তিনি প্রমাণ করে গেছেন, সংখ্যায় কম হলেও, মনোবলে কেউ পিছিয়ে থাকে না। আজকের বাংলায় সেই মনোবলটাই আবার জাগিয়ে তোলার সময় এসেছে—যেখানে ইতিহাস শুধু স্মরণ নয়, দিশা হয়ে উঠবে।

দ্বিতীয় পর্বে নজর রাখুন বিস্তারিত আরও রোমহর্ষক বীরত্বের কাহিনীর জন্য। 

Tags - Who was King Pratapaditya?
Who wrote Pratapaditya charita?
What is the kingdom of Jessore?
রাজা প্রতাপাদিত্য কে ছিলেন?
প্রতাপাদিত্য চরিত কার লেখা?
প্রথম ছেলে রাজা কে ছিলেন?



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code