Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

ভারতের নিজস্ব S-500 !!!!! DRDO-র প্রজেক্ট কুশ ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আনতে চলেছে বিপ্লব

 


মানুষের ভাষা ওয়েবডেস্ক 

২০২৫ সালের ৮ই জুন, ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)- প্রধান এক যুগান্তকারী ঘোষণা দেনপ্রজেক্ট কুশ  (Project Kusha) হচ্ছে এমন একটি দেশীয় বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা রাশিয়ার S-500-এর সমতুল্য এবং S-400-এর থেকেও ক্ষমতাসম্পন্ন।

 

প্রজেক্ট কুশ : ভারতের এয়ার ডিফেন্সে গেম-চেঞ্জার

প্রজেক্ট কুশ  এমন একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী দেশীয় দীর্ঘ-পাল্লার বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (ERADS/PGLRSAM), যা স্টিলথ জেট, ড্রোন, যুদ্ধবিমান এবং ম্যাক গতির অ্যান্টি-শিপ ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিহত করতে সক্ষম, যেখানে ইন্টারসেপশনের সাফল্যের হার ৮০৯০%

এই প্রকল্প MR-SAM (৮০ কিমি) S-400 (৪০০ কিমি)-এর মাঝখানে ফাঁক পূরণ করে এবং আকাশ, বারাক--এর মতো ব্যবস্থার সঙ্গে একত্রিত হয়ে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বলয় গড়ে তোলে।

 এটিআত্মনির্ভর ভারতউদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা পাকিস্তান চীনের মতো আঞ্চলিক হুমকির মোকাবিলায় দেশের নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে তোলার দিকেই নির্দেশ করে। বিশেষত, ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের পর ড্রোন মিসাইল রোধে দেশীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা প্রকট হয়ে ওঠে।

প্রত্যাশা করা হচ্ছে, এই ব্যবস্থা ২০২৮২০২৯ সালের মধ্যে ভারতীয় বায়ু সেনা নৌবাহিনীতে মোতায়েন করা হবে।

 

প্রজেক্ট কুশ  ব্যবস্থার গঠন

ইন্টারসেপ্টর মিসাইল (ত্রিস্তরীয়):

·         M1 ইন্টারসেপ্টর (১৫০ কিমি): কম উচ্চতায় আসা যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্রুজ মিসাইল ধ্বংসে সক্ষম। এতে ২৫০ মিমি ব্যাসের কিল ভেহিকল ডুয়াল-পালস রকেট মোটর যুক্ত, যা একে উচ্চ গতিশীলতা নির্ভুলতা দেয়।

·         M2 ইন্টারসেপ্টর (২৫০ কিমি): AEW&CS এবং ASBM-এর মতো মাঝারি পাল্লার লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে উপযুক্ত। এটি M1-এর মতোই ২৫০ মিমি কিল ভেহিকল ব্যবহার করে।

·         M3 ইন্টারসেপ্টর (৩৫০৪০০ কিমি): বড় বিমানের পাশাপাশি SRBM এবং IRBM ধ্বংসে সক্ষম। এতে বৃহত্তর (৪৫০ মিমি) কিল ভেহিকল ব্যবহার করা হতে পারে।

 

সক্ষমতা:

  •          একক শটে লক্ষ্য ধ্বংসের সম্ভাবনা ৮৫%
  •          স্যালভো মোডে (দুটি মিসাইল একসঙ্গে ব্যবহৃত হলে) সাফল্য হার ৯৮.%
  •          হিট-টু-কিল (HTK) প্রযুক্তি: বিস্ফোরক ছাড়াই কাইনেটিক এনার্জি ব্যবহার করে ধ্বংস
  •          ডুয়াল সিকার প্রযুক্তি: রাডার ইনফ্রারেড গাইডেন্স

 

 উন্নত রাডার সিস্টেম

  •          প্রধান রাডার: Long Range Battle Management Radar (LRBMR)
  •          S-ব্যান্ড রাডার, ৫০০৬০০ কিমি পর্যন্ত নজরদারি
  •          স্টিলথ এয়ারক্রাফট, ড্রোন, গাইডেড মিউনিশন, ব্যালিস্টিক মিসাইল শনাক্তকরণ
  •          IACCS-এর সঙ্গে সমন্বয়
  •         নৌবাহিনীর জন্য × মিটার বিশাল রাডার, ১০০০ কিমি পর্যন্ত শনাক্তকরণ ক্ষমতা

 

বহুমাত্রিক প্রতিরক্ষা বলয়

প্রজেক্ট কুশ  এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে তা সামরিক ঘাঁটি, শহর গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে কৌশলগত কৌশলিক নিরাপত্তা প্রদান করতে পারে। এটি ভারতীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স (BMD) প্রোগ্রামের AD-1 AD-2-এর সঙ্গে সমন্বিত হয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বলয় গড়ে তোলে।

 

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন

  •          AI চালিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ
  •         ডুয়াল সিকার প্রযুক্তি (রাডার+IR)
  •          কমপ্যাক্ট ডিজাইন (২৫০ মিমি ব্যাসের কিল ভেহিকলSM-2/SM-6 অপেক্ষা ছোট)
  •          সেটেলাইট, UAV, AWACS-এর তথ্য একত্র করে দ্রুত প্রতিক্রিয়া

 

বিশ্বমানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা

·         S-400 (রাশিয়া): ৩৬ লক্ষ্যবস্তুতে একসঙ্গে আঘাত করতে পারে। কুশ  সমান পাল্লার সঙ্গে দেশীয়ভাবে তৈরি হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণে বিদেশনির্ভরতা নেই।

·         Patriot (USA): প্রমাণিত হলেও ব্যয়বহুল। কুশ  দেশীয় প্রযুক্তিতে কম খরচে বেশি সুযোগ প্রদান করে।

·         David’s Sling / Iron Dome (ইজরায়েল): সীমিত পাল্লার। কুশ  M2 M3 বেশি দুরত্বে কাজ করতে পারে।

 

 

কৌশলগত গুরুত্ব

·         স্বনির্ভরতা: রাশিয়ার S-400 এর বিকল্প, বিশেষ করে ডেলিভারি জটিলতা এড়িয়ে

·         মূল্যসাশ্রয়ী: S-400 (₹৪৩,৫০০ কোটি) তুলনায় প্রায় অর্ধেক খরচ

·         প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি: পাকিস্তান চীনের আধুনিক বায়ু মিসাইল শক্তির মোকাবিলায় প্রস্তুত

·         রপ্তানি সম্ভাবনা: প্রতিযোগিতামূলক মূল্য উন্নত প্রযুক্তি অন্যান্য দেশের আকর্ষণের কেন্দ্র হতে পারে

 

 চ্যালেঞ্জ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

  •         M1-এর মতো ছোট মিসাইল দিয়ে দীর্ঘ পাল্লা অর্জন
  •          স্টিলথ হাইপারসনিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে নির্ভুলতা
  •          প্রযুক্তিগত একীভবন সময়মতো উন্নয়ন
  •          নৌবাহিনী: Destroyer- M1, M2 মোতায়েন
  •          ভবিষ্যৎ ফেজ II: ৪০০ কিমি+ পাল্লার হাইপারসনিক প্রতিরক্ষা সক্ষমতা, S-500-এর প্রতিদ্বন্দ্বী

 

প্রজেক্ট কুশ  ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এটি একাধিক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ড্রোন, স্টিলথ জেট, ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রভৃতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী ঢাল গড়ে তুলবে।

 স্বল্প খরচে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে, এটি ভারতের আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াবে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখবে।

 তবে, প্রযুক্তিগত বাধা অতিক্রম করে এবং সময়মতো বাস্তবায়ন করাই হবে প্রজেক্ট কুশ র সফলতার চাবিকাঠি। এই প্রকল্প নিঃসন্দেহে ভারতের প্রযুক্তিগত সামর্থ্য প্রতিরক্ষা সংকল্পের প্রতীক।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code