Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

India-Pakistan War : সাহায্য করুন - যুদ্ধে বিপুল আর্থিক ক্ষতিতে দেউলে পাকিস্তান , এবার আন্তর্জাতিক অর্থ সাহায্য চাইল | Operation Sindoor

সাহায্য করুন…! বিপুল ক্ষতির পর ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক দরবারে পাকিস্তান ? সরকার যা বলল…

  • বিসিসিআইয়ের সূত্র মারফত খবর, ভারত-পাক সংঘাতের আবহে আইপিএল ২০২৫ স্থগিত করার সম্ভাবনা প্রবল। আজ সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
  • জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পরিস্থিতি থমথমে। ভারতীয় সেনা সর্বক্ষণ সতর্ক রয়েছে।
  • আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সাহায্যের আবেদন নিয়ে জোর চর্চা। ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া শীঘ্রই জানা যাবে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে এক চাঞ্চল্যকর খবর সামনে এসেছে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রক নাকি বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে অতিরিক্ত ঋণের জন্য আবেদন জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, শেয়ার বাজারে বড়সড় ধসের সম্মুখীন হওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই আবেদনে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মহলকে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য সাহায্যেরও অনুরোধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিমান হামলার প্রত্যাঘাতে ভারত যখন লাহোরে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুঁড়িয়ে দিয়েছে, তার পরই এই খবরটি প্রকাশ্যে আসে। ভারতের এই পদক্ষেপ ছিল পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পুঞ্চে শেলিংয়ের জবাবে, যেখানে ১৩ জন নিরীহ নাগরিক নিহত এবং ৪০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিলেন।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেল থেকে এই বিষয়ে একটি পোস্ট করা হয়, যেখানে লেখা ছিল, “শত্রুর দ্বারা ব্যাপক ক্ষতির পর পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে আরও ঋণের আবেদন জানাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান যুদ্ধ এবং শেয়ার বাজারের পতনের মধ্যে, আমরা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের পরিস্থিতি শান্ত করতে সাহায্য করার অনুরোধ করছি।”





হ্যাকড পাকিস্তানের অ্যাকাউন্ট?

তবে, এই পোস্টটি প্রকাশ্যে আসার পরই পাকিস্তান দাবি করেছে যে তাদের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের এক্স অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই পোস্টটিকে ‘ভুয়ো’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের ফ্যাক্ট চেকার এক্স-এ পোস্টটির একটি ছবি শেয়ার করে এটিকে ‘ভুয়া’ বলে দাবি করেছে এবং লিখেছে, “অ্যাকাউন্টটি হ্যাক করা হয়েছিল।”


যদিও পাকিস্তানের এই দাবি কতটা সত্যি, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, এমন একটি স্পর্শকাতর সময়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ থেকে এই ধরনের পোস্ট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।


ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা :


এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তান ১৫টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলার চেষ্টা চালালে তা সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারতীয় বাহিনী লাহোরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ‘নিষ্ক্রিয়’ করে দিয়েছে বলে খবর। সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এই হামলাগুলি প্রতিহত করা হয়েছে। এই হামলার ধ্বংসাবশেষ বেশ কয়েকটি স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, যা পাকিস্তানি হামলার প্রমাণ দেয়।”


এই সমস্ত ঘটনা বুধবার ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর ঘটেছে। ভারত পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে এই অভিযান চালায়। গত ২২শে এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬ জন মানুষের জন্য এটি ছিল ন্যায়বিচার।


আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনা:


ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রশমনে আন্তর্জাতিক মহলও তৎপর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র Tammy Bruce বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন এবং অবিলম্বে উত্তেজনা কমানোর অনুরোধ করেছেন। তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন এবং যোগাযোগ উন্নতির জন্য উৎসাহিত করেছেন।


মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সচিব পহেলগামের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জন্য গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের সাথে কাজ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।”


ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও এই বিষয়ে টুইট করে জানিয়েছেন, “আজ সন্ধ্যায় মার্কিন @SecRubio-র সাথে কথা বললাম। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের সাথে কাজ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিকে গভীরভাবে উপলব্ধি করি। সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সুনির্দিষ্ট এবং পরিমিত প্রতিক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছি। যেকোনো প্রকার উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করা হবে।”


আইপিএল ২০২৫-এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত:


ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই ক্রমবর্ধমান সংঘাতের আবহে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ২০২৫-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, বোর্ড পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আইপিএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের পরামর্শ চাইছে। মনে করা হচ্ছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আইপিএল স্থগিতও করা হতে পারে। আজ এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে খবর।


পাঞ্জাব কিংস (পিবিকেএস) এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের (ডিসি) মধ্যে ধরমশালায় অনুষ্ঠিতব্য ৫৮তম ম্যাচটি নিকটবর্তী শহরগুলিতে বিমান হামলার সাইরেন বাজার কারণে বাতিল হওয়ার পর এই শঙ্কা আরও বেড়েছে। যদিও বিসিসিআই এটিকে কারিগরি ত্রুটি বলে উল্লেখ করেছে, তবে আসল কারণ যে ভারত-পাক সংঘাতের আবহ, তা ক্রিকেটপ্রেমীদের বুঝতে বাকি নেই।


বিভিন্ন সূত্রে খবর, খেলোয়াড় এবং দর্শকের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বিসিসিআই বেশ কিছু বিকল্প নিয়ে আলোচনা করছে। যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তাহলে টুর্নামেন্ট বাতিলও করা হতে পারে। আবার, পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে স্থগিত করে অন্য কোনও সময়ে বা অন্য কোনও দেশে (যেমন সংযুক্ত আরব আমিরশাহী) বাকি ম্যাচগুলি আয়োজন করার সম্ভাবনাও রয়েছে।


তবে, বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। আজ সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরই বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন অধীর আগ্রহে সেই ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করছেন। দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে খেলার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা সময়ই বলবে।


পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি:


ভারত-পাক সংঘাতের আবহে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও সীমান্ত এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে। যদিও রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি কোনও সীমান্ত নেই, তবুও যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে প্রশাসনকে। রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সাধারণ মানুষকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন।


রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, আইপিএল নিয়ে বিসিসিআই যে সিদ্ধান্ত নেবে, রাজ্য সরকার তা মেনে নেবে। খেলোয়াড় এবং দর্শকদের নিরাপত্তা সবসময়ই অগ্রাধিকার পাবে।


পাক অর্থনীতির উপর প্রভাব:


ভারত-পাক সংঘাতের এই পরিস্থিতির একটি বড় প্রভাব পড়তে পারে দেশের অর্থনীতিতেও। ইতিমধ্যেই শেয়ার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যদি দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বড় ধাক্কা লাগতে পারে।


অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মুহূর্তে সরকারের প্রধান কাজ হল পরিস্থিতি শান্ত করা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখাও জরুরি।


ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের এই আবহে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সাহায্যের আবেদন এবং ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের খবর যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক মহল এই পরিস্থিতির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে। একইসঙ্গে, আইপিএল ২০২৫-এর ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিসিসিআই আজ সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই হয়তো এই জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। তবে, এই মুহূর্তে সকলেরই আশা, দ্রুত এই সংঘাতের অবসান হোক এবং শান্তি ফিরে আসুক। দেশের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতাই এখন প্রধান লক্ষ্য।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code