ব্যক্তিনির্ভর রাজনীতির বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক বার্তা
বিজেপির রাজ্য দপ্তরে অনুষ্ঠিত এই সাংবাদিক বৈঠকে সব রাজনৈতিক নেতার ছবি সরিয়ে শুধু দলের প্রতীক পদ্মফুলের ছবি রাখা হয়। এমনকি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও কোনো ছবি ব্যাকড্রপে রাখা হয়নি। বিষয়টি ঘিরে প্রশ্ন উঠতেই শমীক ভট্টাচার্য অত্যন্ত শালীন অথচ স্পষ্ট জবাব দেন—
“ব্যক্তির চাইতে দল বড়, আর দলের চাইতেও দেশ বড়। এই ব্যাকড্রপ তার প্রতিফলন মাত্র।”
সংবেদনশীলতা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের পরিচয়
অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি ঘিরে বিতর্ক শুরু হলেও ভট্টাচার্য পরিস্থিতি যথেষ্ট সংযতভাবে সামাল দেন। তিনি বলেন,
“শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাব আমাদের গেটের বাইরেও আছে। তাঁর নাম প্রতিনিয়ত মানুষ স্মরণ করে। এমনকি তৃণমূলও তাঁর নাম বারবার উচ্চারণ করে।”
“দিলীপ ঘোষ কোথাও যাননি, যাবেন না, দিলীপ কোথাও যেতে পারবেন না । উনি বিক্রয়যোগ্য পণ্য নন। বিজেপি ঠিক সময়ে তাঁকে যথাযথ জায়গায় কাজে লাগাবে। দিলীপ ঘোষ ছিলেন, আছেন, থাকবেন। ”
ভট্টাচার্য তাঁর ভাষণে “হিন্দু ভাই ভাই” স্লোগানকে ব্যাখ্যা করেন এই বলে—
“যাঁরা ভারতে বসবাস করছেন, তাঁরাই হিন্দু। আমাদের এই বক্তব্যে কোনো বিভেদ নেই।”
এটি একটি সমন্বয়বাদী ও শিক্ষাব্যঞ্জক বক্তব্য, যা একদিকে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়, আবার অন্যদিকে বিভাজনের রাজনীতিকে প্রতিহত করে।
তিনি মঞ্চে কালীমাতার একটি প্রতিকৃতি উন্মোচন করে বলেন—
“কালী কলকাতা ওয়ালি। আমরা সবাই এই কথাটি জানি। কালী এবং কলকাতা সমার্থক।”
এর মাধ্যমে তিনি বাংলার ঐতিহ্য, বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক শিকড়ের সঙ্গে দলের সংযোগ স্থাপন করলেন অত্যন্ত মার্জিতভাবে।
শিক্ষার শক্তিতে গঠিত নেতৃত্ব
শমীক ভট্টাচার্য কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি একজন শিক্ষিত, বিশ্লেষণী মনোভাবসম্পন্ন ও চিন্তাশীল মানুষ। তাঁর প্রতিটি বাক্যে ফুটে ওঠে তার পড়াশোনার ভিত্তি, ভাষার সংযম, এবং রাষ্ট্রনায়কোচিত স্থিতধী মনোভাব। এইসব গুণ তাঁকে বাংলার ‘ভদ্রলোক রাজনীতির’ পুনর্জাগরণের অন্যতম মুখ করে তুলছে।
0 মন্তব্যসমূহ