Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

রাজনীতির পাঁকে ফুটলো পদ্মফুল : রাজ্য বিজেপির প্রধান হলেন শমীক ভট্টাচার্য

 


পশ্চিমবঙ্গ রাজনীতির পটভূমিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় আনল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দলের দীর্ঘদিনের অনুগত নেতা, সাংসদ মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য আজ একমতক্রমে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দলের রাজ্য দফতরে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত অথচ তাৎপর্যপূর্ণ সভায় তাঁর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। সঙ্গে ছিলেন বিদায়ী সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

 ৬২ বছর বয়সী এই বর্ষীয়ান নেতা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। একসময় যখন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোট শতাংশ ছিল মাত্র %, তখন থেকেই তিনি দলের সঙ্গে অবিচল নিষ্ঠায় যুক্ত ছিলেন। তিনি রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও সর্বদা থেকে গেছেন সাধারণ, সংযত এবং মাটির কাছাকাছি একজন বাঙালি ভদ্রলোক নেতা হিসেবে, যা তাঁকে অন্যান্যদের থেকে স্বতন্ত্র করেছে।

 

প্রথম বিজেপি বিধায়ক থেকে রাজ্য সভাপতিএক সংগ্রামের কাহিনি

শমীক ভট্টাচার্য রাজনীতির ময়দানে কেবল উচ্চকণ্ঠ বা দলীয় নেতৃত্বের আনুগত্যেই বিশ্বাসী নন, তাঁর রয়েছে  শিক্ষা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং মার্জিত রাজনৈতিক সৌজন্য। ২০১৪ সালে তিনি  বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র  থেকে নির্বাচনে জিতে ইতিহাস তৈরি করেন। তিনি হয়ে ওঠেন  পশ্চিমবঙ্গে প্রথম বিজেপি বিধায়ক, একটি রাজ্যে যেখানে দীর্ঘদিন ধরে বামফ্রন্ট পরে তৃণমূল কংগ্রেসের আধিপত্য ছিল।

এরপর তিনি দলের হয়ে একাধিক বার প্রচারে নেতৃত্ব দিয়েছেন, মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে উঠেছেন এবং রাজ্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সংযোগ রেখে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। যদিও ২০২১ সালে রাজাহাট-গোপালপুর থেকে বিধানসভা নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করতে পারেননি, তবে দলের  প্রতি তাঁর নিষ্ঠা রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি  তাঁকে পিছিয়ে দেয়নি।

 

শিক্ষিত, মার্জিত, অথচ বিশ্লেষণী নেতৃত্বের প্রতিনিধি

শমীক ভট্টাচার্য একজন স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী  এবং তিনি রাজনীতিকে চিরকালই একটি সেবামূলক ক্ষেত্র হিসেবে দেখেছেন। তার ভাষণ কখনও উত্তেজনাপূর্ণ নয়, বরং যুক্তি পরিসংখ্যাননির্ভর। সংবাদ চ্যানেলে তাঁর উপস্থিতি  সংযত অথচ তীক্ষ্ণ বক্তৃতার নিদর্শন। সেই সঙ্গে রয়েছে তার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, যা আজকের দিনেও রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক বিরল।

  কারণেই বিজেপি তাঁকে সামনে রেখে রাজ্যে নতুন বার্তা দিতে চায়একজন শিক্ষিত, বাঙালি ভদ্রলোক যিনি দলের মূল আদর্শে অটল থেকে বাংলার সংস্কৃতি জনমনের সুর বুঝে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে পারবেন।

 ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় দায়িত্ব

 ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৪৮% ভোট পেলেও বিজেপি প্রায় ৩৮% ভোট পেয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তবে তা যথেষ্ট নয়। ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি এখন চাইছে দলীয় বিভাজন কমিয়ে ঐক্য গড়ে তুলতে এবং সংগঠনকে তৃণমূল স্তরে শক্তিশালী করতে। এই কঠিন দায়িত্ব এখন শমীক ভট্টাচার্যের কাঁধে।

দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শুধু তিনিই মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বোঝা যাচ্ছে, বিজেপি এখন অন্তর্দ্বন্দ্ব বন্ধ করে ঐক্যবদ্ধভাবে এগোতে চায়। তাঁর নির্বাচন শুধুই নেতৃত্ব বদল নয়, বরং একটি ব্যবস্থাগত পুনর্গঠনের বার্তা"

সৌজন্য সংগঠনের যুগল নেতৃত্ব

শমীক ভট্টাচার্যের হাতে রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব তুলে দেওয়া মানে, দল চাইছে রাজনীতিকে আরও মার্জিত বুদ্ধিবৃত্তিক পরিসরে নিয়ে যেতে। একদিকে শুভেন্দু অধিকারীর মতো মাঠের নেতা, অন্যদিকে শমীক ভট্টাচার্যের মতো সংগঠক মুখপাত্রএই যুগল নেতৃত্ব হয়তো বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে এক নতুন ছন্দে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।

 

তাঁর শপথ এখন একটাইদলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে বাংলার রাজনীতিতে বিজেপিকে আরও শক্তিশালী করে তোলা, এবং ২০২৬ সালের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা।

 

 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code