Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

I.N.D.I জোটের চাদর উড়ে গেলো শুভেন্দু ঝড়ে - বহরমপুরে পরে থাকল তার কঙ্কাল #suvenduadhikari #election2024

 I.N.D.I জোটের চাদর উড়ে গেলো শুভেন্দু ঝড়ে  - বহরমপুরে পরে থাকল তার কঙ্কাল

বিশেষ প্রতিবেদন - প্রবীর রায় চৌধুরী

 ইন্ডি জোট এর গঠন হওয়া বিজেপি বিরোধী দলগুলির কাছে একটি অধরা স্বপ্ন হিসেবেই থেকে গেলো বিহারের মুখমন্ত্রী নীতিশ কুমারের হাত ধরে প্রথম ইন্ডি জোটের সভা অঙ্কুরেই অপুষ্টির লক্ষণ দেখিয়েছিল নীতীশের অকস্মাৎ জোট ছেড়ে বিজেপির সাথে হাত মিলিয়ে নেওয়ায় জোটের অবস্থা দাঁড়ায় অনেকটা পর্বতের মূষিক প্রসবের মতো   বলা যায় এক পরিত্যক্ত মুমূর্ষু সদ্যোজাতের মতো - যাকে দূর থেকে সবাই দেখছে কিন্তু লালন পালনের দায়িত্ব কেউই নিতে রাজি নয়দিল্লি , ব্যাঙ্গালোর ছোটাছুটি হলো , বড়দা কংগ্রেস তার চিরকালীন দম্ভ বজায় রাখলো - আর এক একটা মিটিংয়ে এক এক জন শরিক সভা ছেড়ে চলে গেলেন - আমাকে ব্যাট দিতে হবে , নাহলে আমি আর খেলবো না বলে  

 





এরই সঙ্গে যে ঘটনাটা সারা দেশের সঙ্গে এরাজ্যের মানুষও দেখল তা হলো অনেকটা স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়ার মতো সবাই তাদের ক্লাসের দুস্টু ছাত্র হিসেবেই জানে  পরীক্ষায় ভালো মার্কস কোনোবারই পায় না  তারা যেন লুকিয়ে লুকিয়ে সিনেমা দেখতে গেলো  পাশাপাশি সিটে বসে বিরিয়ানি খেলো , তারপর ফিরে এসে আবার যেন কেউ কাউকে চেনে না  ধরা পরে গিয়ে নানা আবোলতাবোল যুক্তি দিতে থাকলো  সে এক বিরাট বিরাট তত্ত্ব কথা - মুক্ষু সুখ্যু মানুষের বোঝার জন্য নয়  তবে সেই বোকা মানুষের দল একটা জিনিস  বিলক্ষণ বুঝলো  কি বুঝলো ?


তারা দেখলো যে কংগ্রেসের হাতে কমরেডরা মার্ খেয়েছে সিদ্ধার্ত রায় আমলে , আবার বদলে যাওয়া  সময়ে শত শত কংগ্রেসি পরিবার অনাথ হয়েছে যে বামফ্রন্টের আমলে , যে কংগ্রেসি লোকটি সিপিএমকে গালি না দিয়ে জল খেত না , যে সিপিএম পার্টি নেতা কংগ্রেস কত খারাপ - কেন বুর্জোয়া , সাম্রাজ্যবাদী দল তা গলার শীর ফুলিয়ে সব জায়গায় ফর্মুলা মুখস্তের মতো বলে যেত - কালো হাত ভেঙে গুঁড়িয়ে  দেওয়ার কথা বলত তারা আজ ভাই বেরাদর  সীতারাম - খাড়গে - রাহুল আজ মিলেমিশে একাকার  এতদিন যে সাধারণ মানুষের মাথা গুলো খেলেন তার হিসাব কই ? এতো বছরের এতো রেষারেষির ফলে দু পক্ষেরই যত পরিবারে মায়ের কোল খালি হলো তার হিসাব কোথায় ? বুর্জোয়া শিক্ষানীতির বুলি আওড়ে , ইংরেজি না শিখিয়ে , কম্পিউটার এর বিরোধিতা করে যে যুব সমাজের ( আজকের প্রৌঢ় ) ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিলেন তার হিসাব কে দেবে ? আজ মিছিল বেরোয় একদিকে লাল পতাকায় কাস্তে তার পাশেই তেরেঙ্গায় হাত আর নীতি ? যারা এখনও তৃণমূল না বিজেপি  কে বেশি শত্রু কার বিরুদ্ধে  বেশি লড়বে সেটাই ঠিক করতে পারলো না , যারা কালের নিয়মে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর দুটি দল তারা একটি নীতি ঘোষণা করলে তা তো কাঁঠালের আমসত্ব , বা সোনার পাথরবাটি  মানুষ বুঝছে মানুষ দেখছে  মানুষ ফ্যাক ফ্যাক করে হাসছে - মনে মনে যার বাবার বা ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে কংগ্রেসি গুন্ডার হাতে অথবা যার বোন বা মা লাঞ্চিত হয়েছে , যাদের কোল খালি হয়েছে সিপিএমের অত্যাচারে - তারা যদি এক মিছিলে হাঁটেও  , কতোদূরই বা হাঁটবে ?

 

আবার দেখুন , সিপিএম - কংগ্রেস মূলত রাজ্যে একজোট হয়েছিল কেন ? না , তৃণমূলকে হঠাতে হঠাৎ যখন লোকসভা ভোট এসে গেলো তখন সব হিসাব গুলিয়ে গেলো  তখন মূল শত্রু কে ? বিজেপি  তখন রাজ্যের মানুষ গোল্লায় যাক  তখন তৃণমূল এদের বন্ধু হয়ে গেলো  রাজ্যে কংগ্রেসের তরুণ নেতারা এর বিরুদ্ধে গলা ফাটালেন এবং তা সর্বজন সমর্থিত হলো  পরিনাম - কৌস্তভ বাগচীর মতো একাধিক কংগ্রেস নেতার দোল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান  এখানে তাদের উদ্দেশ্য খুব একমুখী - তৃণমূলের বিরোধিতা অন্যদিকে বিপদে বুদ্ধিনাশের মতো প্রবল পরাক্রমী রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এই কুনাট্যে যোগ দিলো  সাধারণ রাজনীতির কোনো সমীকরণে তা মাথায় ঢুকবে না  শুধু এটা বোঝা গেলো যে তাদের  একা লড়ার মতো আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে  এমনিতেই তারা একের পর এক কেলেঙ্কারিতে বিপর্যস্ত সেখানে শত্রুর সংখ্যা যদি একটু কমানো যায়  আর রাজ্য এই ফাঁকে যদি বাম-কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হয় তাহলে এখনো লোকসভা বৈতরণী পার করে দেওয়া যাবে বেশ ভালো সংখ্যার আসন নিয়ে  এতে দুটি লাভ - এক কেন্দ্রে দর কষাকষিটা ভালোই জমবে , দুই, রাজ্যে সিপিএম কগ্রেসের চেয়ে অনেক বেশি আসন পেলে ভোটের পর দুটোকে দূরকরে নবান্নের পাশের গঙ্গায় ফেলে দিলেই চলবে  ব্যাস  বিজেপিকে এবার এইভাবে রাজ্য রুখে দিলে মানুষের আর বিজেপি নিয়ে কথা বলার মনোবলটুকুও অবশিষ্ট থাকবে না এছাড়া হাটে -মাঠে-ঘাটে যে ছাপোষা তৃণমূল সমর্থক এর গায়ে সিপিএমের অত্যাচারের চিণ্হ আজও দগদগে , যে দুবেলা সিপিএম জমানার অবসানে তার অবদানকে নানা রূপে অলংকৃত করে হাতের পেশী বুকের ছাতি ফুলিয়ে বর্ণনা করে অসীম তৃপ্তি অনুভব করে , অথবা যে বাম সমর্থক তৃণমূলের জমানার অবসানের অপেক্ষায় বসে আছে - দু ধরনের মানুষই কি সীতারাম ইয়েচুরি আর মমতা বন্দোপাধ্যায় এর জোট বেঁধে বিরিয়ানী খাওয়াটা মেনে নিতে পেরেছে ?


ডাল ,চাল , গম , চিড়ে , সরষে একসঙ্গে ফোটালে কি খিচুড়িও হয় ? যা হওয়ার তাই হলো  কেজরি , হিমন্ত সোরেন আগেই রণে ভঙ্গ দিয়েছিলো - আর এখন তো জেলে বসে আত্মজীবনী লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছে  আর বাকি জোট টিম টিম করে যেটুকু রয়েছে , রামলীলায় যতই হাত ধরে শক্তি প্রদর্শন করুক না কেন সারা ভারতের ব্যাপ্তির  বিচারে তা নিদেন রঞ্জি ট্রফির ম্যাচও হোলো না গ্যালারি ভরলো না তা ওই রামলীলা ময়দানের বৃত্তটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকলো  কংগ্রেসের এক অবোধ বালকের বাড়ির উঠোনে বল খেলার শখ মেটানোর মতো একটা কিছু হোলো

 

তবু এভাবেই চলছিল  রাজ্যে একের পর এক কেলেঙ্কারির খবর , নিত্য নতুন নেতার কীর্তি ফাঁস , প্রতি সন্ধ্যায় "কিছুতেই ঠিক উত্তর দেবোনা" টিভি শো - ক্যাঁচ ক্যাঁচ - কিচির মিচির - ইত্যাদি ইত্যাদি  বিচারপতির এজেন্সিকে ধমক , এক বিচারপতি রায় দিলে আর এক জনের স্থগিতাদেশ , এজেন্সির ধীর মন্থর তদন্ত  আর আমার আপনার বাসে ট্রামে ট্রেনের কামরায় বিশেষ বিশেষ ভবিষ্যৎ বাণী - এসব নিয়েই সকাল রাত  , এবং রাত আবার সকাল হচ্ছিল  কিন্তু এর মাঝে এমন একটা এক্স ফ্যাক্টর চলে এলো যা সব হিসাব ঘেঁটে করে দিলো  যার কাছে  অনেক ভোটকুশলীও ধরাশায়ী - কোনো হিসাব কষেই আটকানো যাচ্ছে না  বড় একরোখা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ  এতদিনে মানুষও তাকে বুঝে নিয়েছে  সেই হিসাব উল্টে দেওয়া ফ্যাক্টরের নাম - শুভেন্দু অধিকারী  তার গন্ডারের গোঁ ক্রমশ জনপ্রিয় হতে হতে কখন যে জনমানসে সঞ্চারিত হয়ে গেছে তা অন্য্ দলগুলি আন্দাজও করতে পারেনি

 

আর তাই মুর্শিদাবাদের বহরমপুর -  যাকে অধীর গড় বলেই লোকে চেনে , সেখানেও যখন শুভেন্দুর আগমন ঘটে তখন সেখানকার  বাঁধ ভাঙ্গা জনসমর্থন চোখে আঙ্গুল দিয়ে এটা দেখিয়ে দেয় যে ইন্ডি জোটের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রেই মানুষ ওই কুনাট্যটিকে বর্জন করেছে  যা অধীর চৌধুরীর গড়ে বিস্ময়কর  যদিও অধীর তার নিজের দলেই কতটা আর গুরুত্ব পান কৌস্তভ বাগচী এপিসোড তার সাক্ষী  অধীরের হয়ে কৌস্তভই কিন্তু প্রতিবাদ মুখর হয়েছিলেন সেই কৌস্তভ আজ শুভেন্দুর সহ সৈনিক  অধীর মিথ কি তবে এবার নড়বড়ে ? শুভেন্দু ঝরে শাসক তৃণমূল আর ইন্ডি জোটের নৌক যে কতটা বেসামাল তা কি বহরমপুর জানিয়ে দিলো ?    

     


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code