Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

WAQF case : কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ নয় : সুপ্রিম কোর্ট

 WAQF case : কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ নয় - সুপ্রিম কোর্ট 


Image -News18 Hindi

ওয়াকফ সংশোধনী আইন অন্তর্বর্তী আদেশ অস্বীকার কোর্টের  

Web Desk :

আজ ভারতের সুপ্রিম কোর্টে বহুল আলোচিত ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫-এর বৈধতা নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বিচারপতি (CJI) সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে প্রায় ৭০টি আবেদনের শুনানি হয়। আবেদনগুলোতে সংশোধিত ওয়াকফ আইনকে সংবিধান-বিরোধী বলে ঘোষণা করার দাবি করা হয়েছিল।

এদিনের শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিল করার বা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারির আবেদনে সাড়া দেবে না। প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আমরা নেব, তবে আপাতত কোনো অন্তর্বর্তী আদেশ দেওয়া হবে না।”

সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, কোনো সম্পত্তিকে ‘ওয়াকফ নয়’ বলে ঘোষণা করা হবে না শুধুমাত্র তার বর্তমান ব্যবহারকারীর কারণে। অর্থাৎ যেসব সম্পত্তিকে আগে থেকেই ওয়াকফ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, তা অনৈতিকভাবে অস্বীকার করা যাবে না। তবে একইসঙ্গে আদালত বোঝায় যে, এই আইন এখনও চূড়ান্তভাবে কার্যকর নয়, এবং এ বিষয়ে বিচারাধীন অবস্থানেই পরবর্তী শুনানি হবে।

এই মামলায় সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিবাল, অভিষেক মনু সিংভি ও আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেন। সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা সরকারের পক্ষে যুক্তি দেন যে, এই আইনটি বহু আলোচনা ও পার্লামেন্টারি কমিটির পরীক্ষার পরেই পাশ হয়েছে এবং এটি ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।


তবে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন ছিল গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি সরাসরি জানতে চান, “যদি আপনি বলছেন মুসলিম ওয়াকফ বোর্ডে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের রাখা যায়, তাহলে হিন্দু ট্রাস্ট বোর্ডে নন-হিন্দুদের আপনি কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করবেন?” এই প্রশ্ন থেকে স্পষ্ট, আদালত ধর্মীয় স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত সতর্ক।

আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ছিল, “ওয়াকফ ব্যবহারের প্রমাণ থাকলেই তা ওয়াকফ হয়ে যায় এমন ভাবা ঠিক নয়।” আদালত ইঙ্গিত দেয় যে শুধুমাত্র ব্যবহারকারীর ইতিহাসের ভিত্তিতে কোনো সম্পত্তিকে ওয়াকফ বলে চিহ্নিত করা যাবে না।

সুপ্রিম কোর্টের এই অবস্থানকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্তরে নতুন করে আলোচনার সূচনা হয়েছে। জামিয়েত উলামা-ই-হিন্দের মাওলানা আরশাদ মাদনী দাবি করেন, এই আইন মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ এবং দেশের সংহতি ও শান্তির জন্য হুমকি।

অন্যদিকে সরকার পক্ষ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছে, এই আইন সংসদে গৃহীত এবং এটি টিকবে। ইতোমধ্যে ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, হরিয়ানা, আসাম, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড-সহ কয়েকটি রাজ্য এই আইনের সমর্থনে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে বিতর্কে এখনো কোনো চূড়ান্ত রায় দেয়নি, তবে আজকের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়—আদালত দ্রুত অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা দিতে ইচ্ছুক নয় এবং সংবিধান ও ধর্মীয় স্বাধীনতার ভারসাম্য বজায় রেখে চূড়ান্ত রায় দিতে চায়। মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code