সিঁথির সিঁদুরের বদলা শুরু অপারেশন সিঁদুর দিয়ে - মিসাইল ও বিমান হামলায় গুড়িয়ে গেলো পাকিস্তানের ৯ জঙ্গি ঘাঁটি
ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ – সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত, ৯টি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস
মানুষের ভাষা
ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত ৯টি সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে। এই হামলা পালহেলগাম হামলার প্রতিশোধ হিসেবেই চালানো হয়েছে। সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকর্তাদের মতে, এই সব ঘাঁটি থেকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালিত হচ্ছিল, যা ভারতে আক্রমণের পরিকল্পনায় লিপ্ত ছিল।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মিসাইল ও বিমান হামলায় গুড়িয়ে গেলো পাকিস্তানের ৯ জঙ্গি ঘাঁটি
ভারতীয় সেনাবাহিনী বুধবার গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানে। এই হামলাগুলি কাশ্মীরের পাহালগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয় বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
কাশ্মীর ও পাকিস্তান অধিকৃত পাঞ্জাবের বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে অপারেশন সিন্দুর চালানো হয়। সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-এ-তৈবা (LeT), জৈশ-ই-মোহাম্মদ (JeM), এবং হিজবুল মুজাহিদিন (HM)-এর মতো দলগুলোকে পাক সেনাবাহিনী ও আইএসআই (ISI)-এর সরাসরি সমর্থন রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবিরগুলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সামরিক ঘাঁটির নিকটেই চালানো হচ্ছিল। স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য ইউনিটের ছদ্মবেশে এসব ঘাঁটি পরিচালনা করা হচ্ছিল। ভারতীয় বাহিনীর এই আঘাতে এই ধরনের ৯টি ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
#OperationSindoor Precise and high Impact missile attack on terrorist hideouts in Pak and PoK.
— Kishore Kunal (@kishorekunal) May 7, 2025
After the operation, all pilots returned to base unharmed. Salute to armed forces. #jaihind #PahalgamTerroristAttack pic.twitter.com/c7fotxSAun
ভারতের এই পালটা হামলায় লক্ষ্যবস্তু ছিল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবির ও লঞ্চ প্যাড। লস্কর-ই-তৈবা (LeT), জইশ-ই-মহম্মদ (JeM) এবং হিজবুল মুজাহিদিন (HM)-এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI) এর প্রত্যক্ষ সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
#OperationSindoor | More information on the terrorist hotbed targeted by the Indian armed forces-
— ANI (@ANI) May 7, 2025
1. Markaz Subhan Allah, Jaish-e-Mohammad Bahawalpur, Punjab, Pakistan- This Markaz serves as the operational headquarter of JeM and associated with terrorist plannings including… pic.twitter.com/EMpWU2txKT
কর্মকর্তাদের মতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আধিকারিকরা নিয়মিত এই প্রশিক্ষণ শিবিরগুলি পরিদর্শন করেন এবং নতুন সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেন। শিবিরগুলিকে নতুন নাম দিয়ে প্রকাশ করা হচ্ছে – যেমন The Resistance Front (TRF), People’s Anti-Fascist Front (PAFF) এবং Kashmir Tigers (KT)। এদের আসল উদ্দেশ্য হল বিশ্বকে ধোঁকা দেওয়া এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপকে অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধের রূপে তুলে ধরা।
ব্রেকিং নিউজ: অপারেশন সিন্দুর - পাকিস্তানের ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে
অপারেশন সিন্দুরে ধ্বংসপ্রাপ্ত পাকিস্তানের ৯ জঙ্গির তালিকা:
১. মারকাজ সুবহান আল্লাহ, বাহাওয়ালপুর
২. মারকাজ তাইবা, মুরিদকে
৩. সর্জাল / তেহরা কালান, নরওয়াল
৪. মেহমুনা জোয়া ফ্যাসিলিটি, সিয়ালকোট
৫. মারকাজ আহলে হাদিস, বারনালা
৬. মারকাজ আব্বাস, কোটলি
৭. মাস্কার রাহিল শহীদ, কোটলি
৮. শাওয়াই নাল্লা ক্যাম্প, মুজাফফরাবাদ
৯. মারকাজ সাইয়েদনা বিলাল, মুজাফফরাবাদ
অপারেশন সিন্দুর: ভারতীয় সেনাবাহিনীর কৌশলগত আক্রমণ
ভারতীয় সেনাবাহিনী এই অপারেশনে অত্যাধুনিক ড্রোন, লং রেঞ্জ আর্টিলারি এবং স্পেশাল ফোর্স কমান্ডোদের ব্যবহার করেছে। রাত্রিকালীন অভিযানে, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই হামলাগুলি পরিচালিত হয়।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের মুজাফফরাবাদ, কোটলি, ও সিয়ালকোটের ঘাঁটিগুলি লস্কর-এ-তৈবা (LeT) এবং জৈশ-ই-মোহাম্মদের (JeM) প্রশিক্ষণ শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
গোয়েন্দা তথ্য এবং অভিযান পরিকল্পনা:
গোয়েন্দা তথ্য: কাশ্মীরের পাহালগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর সন্ত্রাসীদের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারে, পাকিস্তানের ওই ৯টি ঘাঁটিতে প্রায় ২০০ সন্ত্রাসীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
অভিযান পরিকল্পনা: ভারতীয় সেনাবাহিনী পূর্ব পরিকল্পিত কৌশলের মাধ্যমে ঘাঁটিগুলিকে চিহ্নিত করে। রাত্রিকালীন অভিযান চালিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট আঘাত হানা হয়।
অস্ত্রশস্ত্র: অভিযানটিতে লং রেঞ্জ আর্টিলারি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলির ওপর আক্রমণ চালানো হয়। পাশাপাশি ড্রোনের সাহায্যে লক্ষ্যস্থলগুলিতে বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
সেনাবাহিনীর বক্তব্য:
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “অপারেশন সিন্দুর সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের বাহিনী শত্রুপক্ষের ঘাঁটিগুলিকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। এই অভিযান সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
মৃত্যু ও হতাহতের সংখ্যা:
অভিযানে কতজন সন্ত্রাসী নিহত বা আহত হয়েছে সে বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। পাকিস্তান সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এবং পরবর্তী পদক্ষেপ:
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই সফল অপারেশনের পর আন্তর্জাতিক মহল থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
আমেরিকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস দমনে ভারতের পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছে। তবে তারা দু’দেশকেই সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
রাশিয়া: রাশিয়া উভয় দেশকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছে।
চীন: চীন, যার পাকিস্তানের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে, এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘ: জাতিসংঘ মহাসচিব শান্তির বার্তা দিয়ে উভয় দেশকে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া:
পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের এই অভিযানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতের এই হামলা ছিল একটি অযৌক্তিক এবং আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী পদক্ষেপ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ভারতের এই আগ্রাসী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যথাযথ জবাব দেবে। আমাদের সামরিক বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।”
ভারতের নিরাপত্তা প্রস্তুতি:
ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় জম্মু ও কাশ্মীরে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই অভিযান পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলির বিরুদ্ধে একটি কড়া বার্তা। যদিও ভারত এই অভিযানকে সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, পাকিস্তান একে আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রতি হুমকি বলে দাবি করেছে।
আন্তর্জাতিক মহলে এই ঘটনার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া এবং উভয় দেশের সামরিক প্রস্তুতি কেমন হবে, তা নিয়ে এখন সবাই নজর রাখছে।
0 মন্তব্যসমূহ