মালয়েশিয়া থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় - এবার শুধু PoK ফেরানোর কথা হবে!
দেশের জন্য আমি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ব | Abhishek Banerjee
মানুষের ভাষা , ওয়েবডেস্ক (সূত্র-এএনআই ):
আমাদের দেশের রাজনীতিতে এখন উত্তাপ থাকলেও, দেশের সুরক্ষার প্রশ্নে সব দল এক, সেটাই যেন আবার প্রমাণ করে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মালয়েশিয়ায় ভারতীয় প্রবাসীদের সামনে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যদি কথা বলতে হয়, তাহলে একটাই কথা হবে - কীভাবে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) ফিরিয়ে আনা যায়!
সূত্রে খবর, JD(U)-এর সাংসদ সঞ্জয় কুমার ঝা-এর নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় ভারতীয় প্রতিনিধি দল এখন মালয়েশিয়া সফরে আছে। এই দলেই আছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই ভারতীয় প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অভিষেক বলেন, "আমি শাসক দলকে বলতে চাই যে, যদি তারা পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়, তাহলে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে এবার আমরা এমন একটা আলোচনায় বসছি যেখানে আমরা শুধুমাত্র পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর পুনরুদ্ধারের বিষয়ে কথা বলব। না হলে এটা চলতেই থাকবে..."
"I might differ with the ruling dispensation or the political party, I will fight with them tooth and nail. But when it comes to the national security of my country, I will stand firmly and serve towards what is in the best interest of my nation. I will not let my political… pic.twitter.com/1zwqtTWgWl
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) May 28, 2025
অভিষেক তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেন সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের উঁচু পদের সামরিক কর্মকর্তারা নাকি সন্ত্রাসবাদীদের শেষকৃত্যে হাজির হচ্ছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতের কাছে প্রচুর প্রমাণ আছে যা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা যায়। তিনি বলেন, "আমরা সমস্ত প্রমাণ নিয়ে এখানে আছি... সোশ্যাল মিডিয়ায় সর্বত্র ছবি আছে, যেখানে পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ সামরিক জেনারেল এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবাদীদের শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছেন। ভারত আর কী প্রমাণ দেবে বিশ্বকে?"
এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, হাফিজ আব্দুল রউফ, যাকে আমেরিকা বিশ্ব সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছে এবং সে লস্কর-ই-তৈবার একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার, সে নাকি ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহতদের জন্য শেষকৃত্যের প্রার্থনা করিয়েছে। রউফ লস্কর-ই-তৈবার কার্যকলাপ সহজ করার সাথে জড়িত, যার মধ্যে ২০০৮ সালের মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলাও রয়েছে, যেখানে ১৬৬ জন মারা গিয়েছিল।
যদিও তিনি বিরোধী দলের নেতা, তবুও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের কথা জানান। তিনি বলেন, দেশের প্রয়োজনে তিনি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবেন। তিনি রাজনৈতিক মতপার্থক্যকে দেশের স্বার্থের ঊর্ধ্বে রেখেছেন। তিনি বলেন, "শাসক দলের সঙ্গে আমার মতপার্থক্য থাকতে পারে। আমি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এসেছি, কিন্তু আমি এখানে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছি। আমি আমার রাজনৈতিক স্বার্থকে জাতীয় স্বার্থের পথে আসতে দেব না... যখন দেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের সুরক্ষার প্রশ্ন আসবে, আমি আমার দেশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াব..."
অভিষেক কাশ্মীরকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করে পাকিস্তানের ভারতের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টাকে রুখে দেওয়ার ওপর জোর দেন। যারা ভারতে বেড়াতে আসছেন, তাদের কাশ্মীর ভ্রমণে অন্তত ৩-৪ দিন বেশি সময় কাটানোর অনুরোধ করেন তিনি। কাশ্মীরের সৌন্দর্য ও প্রাণোচ্ছলতার কথা তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "তারা এই সন্ত্রাসী হামলা ঘটিয়ে ভারতীয় অর্থনীতিকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছিল, আমাদের ওপর বর্তায় এর উল্টোটা করা এবং নিশ্চিত করা যে কাশ্মীর যেন সবসময় সমৃদ্ধি লাভ করে। যখন আপনারা ভারতে ভ্রমণের জন্য টিকিট কাটবেন, তখন নিশ্চিত করুন যে আপনারা অন্তত ৩-৪ দিন অতিরিক্ত সময় রাখবেন এবং সেই ৩-৪ দিন যেন শুধুমাত্র কাশ্মীরের মানুষের জন্য উৎসর্গীকৃত হয়..."
এই প্রতিনিধি দলে অভিষেক ছাড়াও আছেন বিজেপি সাংসদ ব্রিজ লাল, প্রদান বড়ুয়া, হেমাং যোশি এবং অপরাজিতা সারেঙ্গি; সিপিআই-এমের জন ব্রিটাস; কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সালমান খুরশিদ; এবং মোহন কুমার। এই দলটি ইতিমধ্যেই ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং সিঙ্গাপুর ঘুরে এসেছে। তাদের লক্ষ্য হলো সীমান্ত-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় সংকল্প এবং জিরো-টলারেন্স নীতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা।
0 মন্তব্যসমূহ