Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

China Taiwan Conflict: গর্জাচ্ছে চাইনিজ ড্রাগন যুদ্ধ কি আসন্ন ? পেন্টাগনের হুঁশিয়ারি, ভারতের কী করণীয়?

 সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ার বৃহত্তম প্রতিরক্ষা ফোরাম শাংরি-লা ডায়ালগ-এ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ চীনের সম্ভাব্য আক্রমণ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।



সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ার বৃহত্তম প্রতিরক্ষা ফোরাম শাংরি-লা ডায়ালগ-এ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ চীনের সম্ভাব্য আক্রমণ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “চীনের হুমকি বাস্তব এবং তা আসন্ন ভবিষ্যতে সত্যিতে পরিণত হতে পারে।”  চীনের প্রতি এই  বার্তা দিয়ে হেগসেথ বিশেষভাবে সতর্ক করেন যে, যদি চীন তাইওয়ান দখলের চেষ্টা করে, তবে তা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এবং গোটা বিশ্বের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে।

চীন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজের অংশ বলে দাবি করে আসছে এবং বলপ্রয়োগের মাধ্যমে হলেও তাইওয়ান কে নিজের দখলে আনার হুমকি দিয়ে আসছে। সম্প্রতি চীন তাইওয়ানকে ঘিরে যুদ্ধ মহড়ার মাত্রা বাড়িয়েছে। তবে তাইওয়ানের সরকার এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, “তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে তার জনগণ, বেইজিং নয়।”

এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও কূটনৈতিক শক্তি হিসেবে গণ্য হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি বৃহত্তর জোট গঠনের ক্ষেত্রে ভারত একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠতে চলেছে ।

QUAD (Quadrilateral Security Dialogue) — যার সদস্য ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া — এই জোটের মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের আগ্রাসন রুখতে কৌশলগত সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরো পড়ুন- Current Affairs: কোয়াড (QUAD) কি এবং তার উদ্দেশ্য কি? সঙ্গে পরীক্ষার জন্য MCQ এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টস

গত কয়েক বছরে ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট এবং অস্ত্র রপ্তানি বেড়েছে উল্কার গতিতে  । ২০২৪ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল $৭৩ বিলিয়ন ডলার, যা চীনের পর এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।  সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিরক্ষা ব্যয়ে ধারাবাহিক বৃদ্ধি ভারতকে আরও  শক্তিশালী করছে। ২০১৩-১৪ সালে ভারতের দেশীয় অস্ত্র রপ্তানি ছিল ৬৮৬ কোটি টাকার  যেটি ২০২৪-২৫ সালে বেড়ে হয়েছে ২৩,৬২২ কোটি টাকা, যা প্রায় ৩৪ গুন্ বৃদ্ধি ।

ভারত-তাইওয়ান সম্পর্ক — যদিও ভারত সরকার তাইওয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্তু বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-তাইওয়ান সম্পর্ক দিন দিন জোরদার হচ্ছে। এটি চীনের জন্য বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বার্তা।

পিট হেগসেথ এশিয়ার মিত্র দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন নিজস্ব প্রতিরক্ষা খাতে আরও ব্যয় করার জন্য, ঠিক যেমন এখন ন্যাটোর আওতায় থাকা ইউরোপের দেশগুলো  করছে। তিনি উল্লেখ করেন যে ইউরোপের দেশগুলো যেখানে নিজেদের নিরাপত্তায় জিডিপির ৫% পর্যন্ত ব্যয় করতে শুরু করেছে, সেখানে এশিয়ার অনেক দেশ এখনও ১.৫% থেকে বেশি এগোচ্ছে না।

এই আহ্বানের পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো — ইউরোপীয় নিরাপত্তার দায়ভার ইউরোপে ছেড়ে দিয়ে আমেরিকা যাতে চীনকে প্রতিরোধে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারে।

ভারতের জন্য এই পরিস্থিতি একদিকে যেমন কৌশলগত সুযোগ, অন্যদিকে তা গুরুতর চ্যালেঞ্জও বটে। চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা, ডোকলামের ঘটনার পর উত্তেজনা, গালওয়ান সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতকেও এখন নিজস্ব নিরাপত্তা এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।


ভারতের উচিত:

প্রতিরক্ষা, অস্ত্র গবেষণা ও দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন খাতে ব্যয়বাড়ানো 

QUAD ও অন্যান্য মিত্র শক্তি জোটে সক্রিয় ভূমিকা রাখা

তাইওয়ান ইস্যুতে সতর্ক কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ, যাতে চীনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনা না বাড়ে কিন্তু আন্তর্জাতিক মতামতে ভারসাম্য থাকে

চীনের বিরুদ্ধে সমান্তরাল ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা গঠন করা, যেখানে ভারত একটি চালক শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।


পেন্টাগন প্রধানের এই বক্তব্য শুধু চীন সম্পর্কে সতর্কতাই নয়, বরং একটি কৌশলগত রূপরেখা, যেখানে ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলোকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। ভারত তার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, সামরিক সক্ষমতা ও কূটনৈতিক প্রভাব দিয়ে এই নতুন বাস্তবতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় উঠে আসতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code