পুরীর পবিত্র নিমকাঠে দিঘার জগন্নাথ-মূর্তি! মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর উঠল তীব্র বিতর্ক, তদন্তে নামল ওড়িশা সরকার
Manusher Bhasha ডেস্ক
দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে বাংলায় উৎসবের আবহ থাকলেও, পুরীর মাটিতে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। ওড়িশা সরকারের অভিযোগ—দিঘার মন্দিরে ব্যবহৃত জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার মূর্তিগুলি ২০১৫ সালের পুরীর নবকলেবর অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত পবিত্র নিমকাঠের 'বাড়তি অংশ' দিয়ে তৈরি!
তদন্তের নির্দেশ
শুক্রবার ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন পুরীর শ্রীজগন্নাথ মন্দির প্রশাসকের উদ্দেশে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন—এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে হবে। যদি প্রমাণ মেলে, তাহলে পবিত্র কাঠের অবৈধ ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নবকলেবর ও নিমকাঠের পবিত্রতা
There are only four Dhams in India and the #JagannathDham at Puri is one of them.
— Sudarsan Pattnaik (@sudarsansand) May 2, 2025
The temple inaugurated in Digha cannot be a #JagannathDham. So My humble request to Hon’ble CM @MamataOfficial, please immediately order not to call it as Jagannath Dham as it hurts the sentiments… pic.twitter.com/RmAzKe1tUC
জানা যায়, নবকলেবর অনুষ্ঠানে জগন্নাথদেবের মূর্তি বিশেষ পবিত্র নিম কাঠে তৈরি হয়। সেই কাঠের কোনও বাড়তি অংশ কোথায় গেল, তা নিয়ে রেকর্ড রাখা হয়। আর এখানেই জড়িয়েছে দিঘার মন্দিরের নাম।
কী বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি?
পুরীর দৈতাপতি রামকৃষ্ণ দশমহাপাত্র দিঘার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলার সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি নাকি স্বীকার করেছিলেন যে “২০১৫ সালের বাড়তি পবিত্র কাঠ দিঘার মন্দিরে পাঠানো হয়েছিল মূর্তি তৈরির জন্য।” তবে পরে পুরীতে সাংবাদিক বৈঠকে সেই মন্তব্য অস্বীকার করেন তিনি। দাবি করেন, “সংবাদমাধ্যম আমার বক্তব্য বিকৃত করেছে। দিঘার মূর্তি সাধারণ নিমকাঠ দিয়ে তৈরি।”
পুরীতে ক্ষোভ
এই অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই পুরীর বহু সেবাইত রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, “পুরীর পবিত্রতা এবং ধর্মীয় ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জগন্নাথ ধাম একটাই—সেটা পুরী। অন্য কোথাও এই নামে মন্দির তৈরি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে।”
সুদর্শন পট্টনায়কের উদ্বেগ
বিশিষ্ট স্যান্ড আর্টিস্ট সুদর্শন পট্টনায়ক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করেছেন, যেন দিঘার মন্দিরকে "জগন্নাথধাম" না বলা হয়। তাঁর বক্তব্য, “এই নামে পরিচিত কেবল পুরী মন্দির। অন্যত্র একেই নামে প্রচার হলে তা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করবে।”
তুলনার বিতর্ক
জানা গেছে, দিঘার মন্দিরটি হিডকো নির্মিত, যার উচ্চতা ২১৩ ফুট—পুরীর মন্দিরের (২১৪ ফুট) প্রায় সমান। এটিও বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
ট্যাগস :
জগন্নাথ মন্দির দিঘা | পুরী নিম কাঠ বিতর্ক | নবকলেবর | দিঘা বনাম পুরী | জগন্নাথ ধাম বিতর্ক | মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘা মন্দির | ওড়িশা বনাম বাংলা ধর্মীয় বিতর্ক | রামকৃষ্ণ দশমহাপাত্র বিতর্ক | জগন্নাথ মূর্তি কাঠ তদন্ত | বাংলার রাজনীতি ও ধর্ম
0 মন্তব্যসমূহ