Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

Dilip Ghosh News : দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কুর ছেলে প্রীতমের রহস্যমৃত্যু , মৃত্যুর কারণ ঘিরে রহস্য | নিউটাউনের আবাসন থেকে উদ্ধার দেহ

দিলীপ ঘোষের স্ত্রীর আগের পক্ষের ছেলের রহস্যমৃত্যু, নিউটাউনের আবাসন থেকে উদ্ধার দেহ



ওয়েব ডেস্ক, মানুষের ভাষা: 

বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের আগের পক্ষের একমাত্র পুত্র প্রীতম দাশগুপ্ত ওরফে সৃঞ্জয়ের রহস্যমৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে নিউটাউনের শাপুরজি আবাসনের একটি ফ্ল্যাট থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রীতমের বয়স ২৮ বছর।


বিধাননগর কমিশনারেটের টেকনো সিটি এলাকার শাপুরজি আবাসনে একাই থাকতেন প্রীতম। তিনি একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। আজ সকালে আবাসনের কর্মীরা তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন। দ্রুত তাঁকে টাটা মেডিক্যাল সেন্টারের পাশে অবস্থিত দিতের ওহিয়ো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে নিউ টাউন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং দেহ উদ্ধার করে।


প্রীতমের মৃত্যুর কারণ ঘিরে তীব্র রহস্য দানা বেঁধেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর গলায় ফাঁসের চিহ্ন দেখা গেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যার ঘটনা হতে পারে। তবে, কেন একজন তরুণ এবং কর্মক্ষম যুবক এমন চরম সিদ্ধান্ত নিলেন, তা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে। পুলিশ খতিয়ে দেখছে, ওই আবাসনে প্রীতম একাই থাকতেন নাকি অন্য কেউ তাঁর সঙ্গে থাকতেন। পরিবারের সদস্যরা এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।


তদন্তের জন্য প্রীতমের মোবাইল ফোনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, মৃত্যুর আগে তিনি শেষ কার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। পাশাপাশি, তিনি কোনো প্রকার মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন কিনা, সে বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজও শুরু করেছে পুলিশ।


উল্লেখ্য, গত ১৮ই এপ্রিল দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের এক মাস না পেরোতেই রিঙ্কুর আগের পক্ষের ছেলের এই আকস্মিক ও রহস্যজনক মৃত্যু পরিবারে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে। সেই সময় সৃঞ্জয় রাজ্যের বাইরে ছিলেন এবং মায়ের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে, ফোনে তিনি মাকে নতুন জীবনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন এবং উপহার নিয়ে শীঘ্রই ফিরবেন বলেও জানিয়েছিলেন। মায়ের এই সিদ্ধান্তকে তিনি অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেছিলেন।


বিয়ের পর এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রীতম বলেছিলেন, "ব্যক্তিগত ভাবে খুবই খুশি যে আমার মা খুশি। গত অনেক বছর সমাজের প্রতি, পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করেছেন মা। আমি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। সময় দিতে পারি না। মা যে ব্যক্তিগত জীবনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি খুবই খুশি। মা আমাকে প্রচণ্ড ভালবাসেন, আমিও মাকে খুব ভালবাসি। সবসময় মায়ের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। মায়ের সব সিদ্ধান্ত খুব স্বচ্ছ এবং যুক্তিগ্রাহ্য হয়। আমিও বুঝতে পারি, মা অনেকগুলো বছর একাই যুদ্ধ করেছে। ঠিকই আছে। আমি খুব খুশি।"


প্রীতম অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন এবং সল্টলেকের একটি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর ডাকনাম ছিল প্রীতম এবং সৃঞ্জয় ছিল তাঁর অফিসিয়াল নাম। মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে তিনি দূর থেকে দেখেছিলেন এবং সংবাদমাধ্যমে নিজের খুশির কথা জানিয়েছিলেন। এমনকি, মায়ের বিয়ের পরিকল্পনায় তাঁর বড় ভূমিকা ছিল বলেও জানা যায়।


আজ প্রীতমের দেহ প্রথমে বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে ময়নাতদন্তের জন্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিঙ্কু মজুমদারের বিয়ের পর প্রীতম নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে একাই থাকতেন, কারণ রিঙ্কু দিলীপ ঘোষের সঙ্গেই থাকতেন।


এই ঘটনা ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদার উভয়েই বিজেপি-র সক্রিয় সদস্য হওয়ায় এই রহস্যমৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এটা আত্মহত্যা নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শোকের ছায়া নেমে এসেছে দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদারের পরিবারে। পুলিশ সমস্ত দিক বিবেচনা করে তদন্ত করছে। সম্প্রতি স্ত্রীকে নিয়ে দিলীপ ঘোষ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে গিয়েছিলেন, যা নিয়েও কিছু মহলে অসন্তোষ দেখা গিয়েছিল। তবে, এই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা, তা তদন্ত সাপেক্ষ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code