মানুষের ভাষা ওয়েবডেস্ক
তৃণমূল কংগ্রেসের বার্ষিক শহীদ দিবস উপলক্ষে আগামীকাল ২১ জুলাই (সোমবার) কলকাতায় ব্যাপক জমায়েতের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে শহরের একাধিক নামী স্কুল ছুটি ঘোষণা করেছে।
কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে প্রতি বছরের মতো এবারও শহীদ দিবসের মেগা র্যালি অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুপুর ১টার সময় ভাষণ দেবেন বলে জানা গিয়েছে। সকাল থেকেই শহরে আসবেন হাজার হাজার তৃণমূল সমর্থক। ফলে শহরের যানজট ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কোন কোন স্কুলে ছুটি?
এই র্যালির কারণে ছুটি ঘোষণা করেছে কলকাতার বেশ কিছু খ্যাতনামা স্কুল। তাদের মধ্যে রয়েছে:
Loreto House
Loreto Convent, Entally
St. James’ School
The Heritage School
Loreto Day School Sealdah
Loreto Day School Elliot Road
Loreto Day School Dharamtala
Loreto Day School Bowbazar
কোন কোন স্কুলে অনলাইন ক্লাস?
তবে কিছু স্কুল সম্পূর্ণ ছুটি না দিয়ে অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে:
La Martiniere Boys’ and Girls’ Schools
Birla High School (Main and Mukundapur campuses)
Sushila Birla Girls’ School
South Point School (শুধু ক্লাস ৫ পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চলবে, ক্লাস ৬ ও তার উপরের শ্রেণিতে প্যারেন্ট-টিচার মিটিং থাকবে সকাল ১১.৩০-এ শেষ হবে)
La Martiniere স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লোয়ার নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব ক্লাস অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, ৬ থেকে ১২ শ্রেণির ইউনিট টেস্ট যেটি সোমবার হওয়ার কথা ছিল, তা মঙ্গলবার নেওয়া হবে।
স্কুল ছুটির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বহু অভিভাবক। অতীতে এই র্যালির কারণে যানজটে পড়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে বিকেল ৪টা বা তারও পরে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। ফলে অনেক সময় ছাত্রদের মানসিক চাপ বেড়ে যায়। Loreto House-এর এক অভিভাবক দেবিকা বর্মন বলেন, “এটা খুব ভালো সিদ্ধান্ত। না হলে আমরা সারাদিন দুশ্চিন্তায় থাকি, কখন মেয়ে বাড়ি ফিরবে। খুব চাপের মধ্যে পড়ে যাই।” La Martiniere Boys-এর ছাত্র আনন্দী জৈনের মা বলেন, “একবার আমার ছেলে তিন ঘণ্টার বেশি যানজটে আটকে ছিল। সেই অভিজ্ঞতার পর আমি ২১ জুলাই ওকে স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি। এবার ছুটির সিদ্ধান্ত শুনে খুব খুশি হয়েছি।”
আদালতের নির্দেশ
শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কলকাতা হাই কোর্ট শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে যে, শহীদ দিবস উপলক্ষে তৃণমূলের যে সব মিছিল ধর্মতলার দিকে যাবে, সেগুলো সকাল ৮টার মধ্যে বা ১১টার পর ধর্মতলা পৌঁছাতে হবে, যেন অফিস টাইমে শহরের ট্রাফিক বিঘ্ন না ঘটে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মৌখিক পর্যবেক্ষণে বলেন, ভবিষ্যতে এই র্যালির জন্য বিকল্প স্থান ভাবা উচিত। তিনি শহীদ মিনার, ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড বা সল্টলেক স্টেডিয়ামের মতো স্থান ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
তৃণমূল কংগ্রেস ১৫ বছর ধরে এই বার্ষিক র্যালি আয়োজন করে আসছে ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর স্মৃতিতে, সেই সময় যুব কংগ্রেসের নেত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে।
র্যালিকে ঘিরে শহরের যান চলাচল, নিরাপত্তা ও জনজীবনে প্রভাব পড়বে—এমনটাই ধরে নিয়েই এবার আগে থেকেই স্কুলগুলির তরফে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ