মানুষের ভাষা ওয়েবডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আজ শপথ নিলেন লিবারাল নেতা লি জে-মুং, যিনি তার পূর্বসূরি ইউন সুক ইওলের ইমপিচমেন্ট ও মার্শাল ল আইন ঘোষণার ব্যর্থতার পরে ক্ষমতায় এলেন। তবে এই শুরুর পথ মোটেই মসৃণ নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত উত্তর কোরিয়া এবং নিজ দেশের আর্থিক মন্দা—এতসব চ্যালেঞ্জ এখন তাঁর কাঁধে।
লি জে-মুং বলেন, “আমার প্রথম কাজ হবে সামরিক অভ্যুত্থান মোকাবিলা এবং তা কখনও যেন আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করা। এই সাময়িক সংকট আমরা সম্মিলিত শক্তিতে কাটিয়ে উঠব।”
ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রভাব ও সম্পর্ক জোরদার
নতুন প্রেসিডেন্ট লির দায়িত্ব গ্রহণে ভারতের দৃষ্টি এখন দক্ষিণ কোরিয়ার ভবিষ্যৎ পররাষ্ট্রনীতির দিকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বিশেষ কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও প্রসারিত ও দৃঢ় করার প্রত্যাশা করছি।”
দক্ষিণ কোরিয়া ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা অংশীদার। ভারত আশা করছে, লি জে-মুং এর শাসনে দিল্লি-সিউল সম্পর্ক আরও গভীর হবে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন এশিয়ার ভূরাজনীতি রুশ-চীন-উত্তর কোরিয়া অক্ষ বরাবর পুনর্গঠিত হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সংকট ও ছোট ব্যবসার জন্য পরিকল্পনা
লি তার জয়োৎসব ভাষণে জানান, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য জীবনযাত্রার ব্যয় হ্রাস এবং ছোট ব্যবসার পুনরুজ্জীবন হবে তাঁর অগ্রাধিকার। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বেও এই আর্থিক পরিকল্পনার প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে।
ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি ও ভারতের নজর
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানির ওপর (বিশেষ করে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রে) ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপাতে পারে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতিতে ধাক্কা দেবে। এর ফলে দক্ষিণ কোরিয়া বিকল্প বাণিজ্যিক বাজার খুঁজবে, যেখানে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হতে পারে।
উত্তর কোরিয়া ও কূটনৈতিক পরিবর্তন
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে লি এক নতুন নীতির ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, তার পূর্বসূরি ইউন ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তরের সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার পক্ষেও মত প্রকাশ করেন, যা ভারতের জন্য একটি কৌশলগত সতর্কতা হতে পারে।
লি জে-মুং-এর অভিষেক দক্ষিণ কোরিয়ায় গণতন্ত্র রক্ষার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। ভারতের দৃষ্টিতে এটি একটি সুযোগ, যেখানে দুই দেশ অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও কৌশলগত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ