নিউটনের তৃতীয় সূত্র মেনে কাজ হবে।মুখ্যমন্ত্রীর 'বহিরাগত' বিতর্ক: হিন্দুদের প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি কৌস্তভ বাগচীর
মানুষের ভাষা
কলকাতা, ১৩ই মে, ২০২৫: সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনা এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য রাজনীতিতে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিজেপি নেতা এবং আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী মুখ্যমন্ত্রীর 'হিন্দু-বিরোধী' কার্যকলাপের তীব্র সমালোচনা করে 'প্রতিরোধে'র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী 'জালি হিন্দু' এবং 'বহিরাগত'দের প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
কৌস্তভ বাগচী বলেন, "হিন্দু হিসেবে হিন্দুদের কথা বলতে আমার কোনো লজ্জা নেই। মুখ্যমন্ত্রী কাল এমন বক্তৃতা করছিলেন, যেন কেঁদে ফেলবেন। আনসারুল বাংলা এবং পিএফআই-এর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি ৩০ শতাংশ ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে নাচানাচি করুন, আমরা ৭০ শতাংশ হিন্দুদের পাশে থাকব।"
মুর্শিদাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে কৌস্তভ বাগচী বলেন, "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে 'নিমচোর' বলা হচ্ছে। এর উত্তরে তিনি আবোলতাবোল বকছেন। পুলিশকে দিয়ে বিরোধী দলের কর্মীদের বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি, ছেলেকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ দায়ের করানো হয়েছে। কিন্তু, হাইকোর্টে গিয়ে সেই ছেলেই পুলিশের বিরুদ্ধে জোর করে অভিযোগ দায়ের করানোর কথা জানিয়েছে।"
মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরকে 'সম্পূর্ণ ফ্লপ' আখ্যা দিয়ে কৌস্তভ বাগচী বলেন, "গোটা হিন্দু সমাজ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় কালো পতাকা লাগানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ যাতে কেউ শুনতে না পায়, তাই ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকি, কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলি থেকে পুলিশ এনেও মোতায়েন করা হয়েছে।"
মুখ্যমন্ত্রীর 'বহিরাগত' মন্তব্য প্রসঙ্গে কৌস্তভ বাগচী বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বহিরাগত কাদের বলছেন? তিনি কি বাংলাদেশ থেকে জেহাদিদের আমদানি করে হিংসা ছড়াচ্ছেন? এই ঘটনায় যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের মধ্যে ক'জন বহিরাগত? সবাই তো স্থানীয় লোক। পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, তাও প্রশাসনিক মদতে।"
তিনি আরও বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মৌলবাদীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে, কারা আক্রমণকারী হিসেবে পরিচিত। আমরা আর ধৈর্য ধরব না। এর পর পুলিশ-প্রশাসনকেও কেউ গুরুত্ব দেবে না। নিউটনের তৃতীয় সূত্র মেনে কাজ হবে।"
মুখ্যমন্ত্রীর 'নিমচোর' মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কৌস্তভ বাগচী বলেন, "উনি মানুষে মানুষে ভাগাভাগি চান। আমি হিন্দু হয়ে কী করে ভাগাভাগি করব? উনি জালি হিন্দু। কোনো প্রকৃত হিন্দু এমন কাজ করবে না।"
জগন্নাথ মন্দির এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর হিজাব পরে বসা নিয়ে কৌস্তভ বাগচী বলেন, "মুসলমানদের অনুষ্ঠানে গিয়ে উনি নামাবলী পরে দেখুন। 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলার জায়গায় 'হর হর মহাদেব' বলুন। উনি জানেন, হিন্দুদের আবেগে আঘাত করা সহজ। তাই, আমরা ৭০ শতাংশ হিন্দুদের ক্ষমতা দেখালে উনি বুঝবেন, ৩০ শতাংশের থেকে ৭০ শতাংশের ক্ষমতা বেশি।"
কৌস্তভ বাগচী মুখ্যমন্ত্রীর 'শান্তির বার্তা' নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, "হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের মতো কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে পারলে, তবে শান্তির বার্তা দিন। হিন্দু সমাজ যদি প্রতিরোধে নামে, তবে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে। আমরা চাই না, বাংলায় মুজাফফরনগরের মতো পরিস্থিতি তৈরি হোক।"
তিনি আরও বলেন, "হিন্দু মরলে দেরি, মুসলমান মরলে ২৪ ঘণ্টা। কারণ, ভোটব্যাঙ্ক বলে কথা। হিন্দুদের অনুষ্ঠানে হিজাব পরে বসলে, কপালে চন্দনের ফোঁটা মুছে দিলে, 'জয় জগন্নাথ' বললে চুপ করে থাকলে, বোঝাই যায় উনি কাদের লোক।"
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি:
এই প্রতিবেদনে কৌস্তভ বাগচীর মতামত সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে উপস্থাপিত করা হয়েছে। 'মানুষের ভাষা' কর্তৃপক্ষ এই মতামতের সত্যতা বা নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে কোনো নিশ্চয়তা প্রদান করে না এবং এর জন্য কোনো দায়ভার গ্রহণ করে না। এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত।
0 মন্তব্যসমূহ