আর জি কর মামলা: আর জি করের নিহতের মা ভরা কোর্টে বললেন "নির্লজ্জ"! সিবিআই-এর মহিলা তদন্তকারী অফিসারের চোখে জল
আর জি কর হাসপাতালের নিহতের (নির্যাচিতা) ডাক্তারের মা ভরা আদালতে 'নির্লজ্জ' বলে আঙুল তুললেন। আর এতেই সিবিআই-এর মহিলা তদন্তকারী অফিসারের চোখে জল। আদালত থেকে বেরিয়ে এসে তিনি বললেন, "আমি নিজেও তো একজন মা।" শুক্রবার শিয়ালদহের এসিজেএম আদালতে আর জি কর হাসপাতালের এক মহিলা ডাক্তারের ধর্ষণ ও হত্যা মামলার শুনানির সময় এমন দৃশ্য দেখা গেল।
আর জি কর ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্তে সিবিআই আজ আদালতে সপ্তম কেস ডায়েরি জমা দিয়েছে। তবে, নিহতের বাবা-মা সিবিআই তদন্তের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু নিহতের বাবা অভিযোগ করেন যে তাদের মেয়ের ধর্ষণ ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীকে আড়াল করা হচ্ছে।
ওইদিন শুনানির সময় নিহতের বাবা বিচারক অরিজিৎ মণ্ডলের কাছে বলেন, "একটিই আর্জি। অপরাধীকে বাঁচাতে সিবিআই সবরকম চেষ্টা করছে। তারা বড় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তকারী অফিসারকে বলুন হস্টেলে ঠিক কী কী পাওয়া গেছে। তিনি এত দিন আমার ফোন ধরেননি। দিল্লিতে গিয়ে সিবিআই ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি বলেন, তাহলে আমরা মামলাটি বাতিল করছি। আমরা বলি, সেটা আদালতে বলুন। তখন তারা আমাদের ডেকে বললেন, আমি একটি অতিরিক্ত চার্জশিট দেব।"
নিহতের বাবার কাছ থেকে এই কথা শুনে বিচারক প্রশ্ন করেন, "হস্টেলে কি প্রাসঙ্গিক কিছু পাওয়া গিয়েছিল?" জবাবে নিহতের বাবা বলেন, "হ্যাঁ, গিয়েছিল। গোপন জবানবন্দি দিয়ে আমরা এই কথা বলব। তদন্তকারী অফিসার আমাদের বাড়িতে এসে বলেছিলেন, মেয়েটির কপাল খারাপ। সঞ্জয় গিয়ে এই কাজ করে মেরে ফেলেছে।"
নিহতের মা বলেন, "আমার মেয়েকে হারিয়েছি। কেন বলব না, সেটা বলতে দেওয়া হবে না? তদন্তের সময়কার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তদন্তকারী অফিসার আমার স্বামীকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন কী বলতে হবে। আমার মেয়ে সেমিনার রুমে ছিল না। কোথায় ছিল? এই জবাবটাই তো আমরা চেয়েছিলাম, এটুকুই কি বেশি চাওয়া?" এরপর তিনি তদন্তকারী অফিসার সীমা পাহুজার দিকে আঙুল তুলে নিহতের মাকে "নির্লজ্জ" বলে সম্বোধন করেন।
এই ঘটনার পর বিচারক নিহতের বাবা-মাকে শান্ত হয়ে বাইরে যেতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই সিবিআই তদন্তকারী অফিসার সীমা পাহুজা এজলাস থেকে বেরিয়ে এসে কেঁদে ফেলেন।
এই মামলায় বিচারক সিবিআই-এর কাছ থেকে কেস ডায়েরি তলব করেছেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছে। আজ আদালতে জমা দেওয়া সপ্তম স্থিতাবস্থা প্রতিবেদন (status report) পরীক্ষা করার জন্য আদালত কেস ডায়েরি তলব করেছে।
0 মন্তব্যসমূহ