Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

নিউটাউনে এবার সংখ্যালঘুদের আপত্তিতে সরল দুর্গাঙ্গন | দুর্গাঙ্গন-এর স্থান পরিবর্তন নিয়ে মমতাকে তীব্র আক্রমণ শুভেন্দুর

সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের চাপে নতিস্বীকার? নিউটাউনে ‘দুর্গাঙ্গন’-এর স্থান পরিবর্তন নিয়ে মমতাকে তীব্র আক্রমণ শুভেন্দুর

Image- The Economic Times

নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা: রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন হিন্দু ভোট টানতে মরিয়া শাসকদল, ঠিক তখনই নিউটাউনের বহুল আলোচিত ‘দুর্গাঙ্গন’ প্রকল্প নিয়ে বড়সড় দুর্নীতির ও তোষণের অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত ২১শে জুলাই ধর্মতলার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিউটাউনে একটি বিশাল ‘দুর্গাঙ্গন’ বা মা দুর্গার স্থায়ী মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু কাজ শুরু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই সেই প্রকল্পের স্থান পরিবর্তন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করলেন শুভেন্দু।

‘ঠেলার নাম বাবাজি’: শুভেন্দুর বিস্ফোরক পোস্ট

রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর, সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি নথি ও ভিডিও শেয়ার করে বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, নিউটাউনের বিশ্ববাংলা সরণিতে ওয়েস্টিন হোটেলের উল্টোদিকে যেখানে আগে দুর্গাঙ্গন হওয়ার কথা ছিল, সেখান থেকে প্রকল্পটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর ভাষায়, “নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন মাননীয়া। ঠেলার নাম বাবাজি!”

শুভেন্দু অধিকারীর দাবি অনুযায়ী, নির্ধারিত জমিতে শিলান্যাসের জন্য বিশালাকার মঞ্চও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এমনকি মাটি ভরাটের জন্য চার কোটি টাকা খরচও করে ফেলেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রকল্পের স্থান বদলে নিউটাউন বাস স্ট্যান্ডের কাছে একটি শিল্প তালুকের জমিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।


তোষণের রাজনীতি নাকি জমি জট?

বিরোধী দলনেতার দাবি, দুর্গাঙ্গন তৈরির আগের জমিটি যখন সরকার অধিগ্রহণ করেছিল, তখন তার মালিকানায় বেশ কিছু মুসলিম পরিবার ছিল। শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট অনুযায়ী, স্থানীয় মুসলিম সমাজ ও ওই পরিবারগুলো আপত্তি তুলেছে যে, তাদের এলাকায় কেন সরকারি অর্থে হিন্দু ধর্মীয় স্থল নির্মাণ করা হবে?

শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য থেকে জানা যাচ্ছে:

"মুখ্যমন্ত্রী তো মুসলমানদের আপত্তি করলে পিছিয়ে যেতে বাধ্য। চার কোটি টাকা জলে দিয়ে এখন তিনি নিউটাউন বাস স্ট্যান্ডের পাশে শিল্পের জন্য রাখা জমিতে শিলান্যাস করতে যাচ্ছেন। সেখানে কোনো টেন্ডার হয়নি, কোনো ওয়ার্ক অর্ডার নেই।"

শুভেন্দুর মতে, একদিকে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক হারানোর ভয়, আর অন্যদিকে নিজেকে হিন্দু দরদী প্রমাণ করার চেষ্টা—এই দুইয়ের যাঁতাকলে পড়ে এখন নাজেহাল অবস্থা তৃণমূল সুপ্রিমোর। মা দুর্গাকে নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘মেসি ম্যাজিক’ দেখাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষমেশ তা ‘মেসি ম্যাসাকার’-এ পরিণত হয়েছে বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।

"তৃণমূলের লক্ষ্য তোষণ, বিজেপির লক্ষ্য শ্রদ্ধা"

এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষও তৃণমূল সরকারকে একহাত নিয়েছেন। তাঁর মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিকে হিন্দু ভোট পেতে নিউটাউনে দুর্গাঙ্গন বানানোর নাটক করছেন, আর অন্যদিকে তাঁর 'সাসপেন্ডেড' বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে দিয়ে বাবরি মসজিদ তৈরির চাতুরি করছেন। দিলীপ ঘোষের কথায়, "নির্বাচনের আগে এই ডবল গেম খেলছেন মুখ্যমন্ত্রী।"

প্রশ্নের মুখে সরকারের পরিকল্পনা

শুভেন্দু অধিকারীর তোলা এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তবে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে:

১. জনগনের করের চার কোটি টাকা খরচ করার পর কেন জমি নিয়ে পুনরায় তদন্ত করা হলো না?

২. শিল্পের জন্য নির্ধারিত জমিতে তড়িঘড়ি কেন ধর্মীয় প্রকল্প সরিয়ে আনা হলো?

৩. কোনো টেন্ডার বা আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই কি নতুন জায়গায় শিলান্যাস সম্ভব?

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা যে সুরক্ষিত নন এবং সরকার যে কেবল একটি নির্দিষ্ট ভোটব্যাঙ্কের নির্দেশেই চলে, দুর্গাঙ্গন প্রকল্পের এই স্থান পরিবর্তন তারই বড় প্রমাণ। মা দুর্গার নাম নিয়ে তৃণমূল যে দ্বিচারিতা করছে, ২০২৬-এর নির্বাচনে বাংলার মানুষ তার যোগ্য জবাব দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।


  • শুভেন্দু অধিকারী দুর্গাঙ্গন টুইট, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাঙ্গন নিউটাউন, নিউটাউন দুর্গাঙ্গন স্থান পরিবর্তন।

  • নিউটাউনের দুর্গাঙ্গন প্রকল্প নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক অভিযোগ। কেন স্থান পরিবর্তন করল মমতা সরকার? জানুন বিস্তারিত।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code