Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

গভীর রাতে আর্তনাদ, বাংলাদেশে ভস্মীভূত সাহা বাড়ি! অমিত মালব্যের অভিযোগের তির সরাসরি মমতার দিকে

গভীর রাতে আর্তনাদ, বাংলাদেশে ভস্মীভূত সাহা বাড়ি! অমিত মালব্যের অভিযোগের তির সরাসরি মমতার দিকে



নিজস্ব প্রতিবেদন, ঢাকা ও কলকাতা: ওপার বাংলার আকাশে আবার ঘনিয়ে এসেছে অন্ধকারের ছায়া। দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের ক্ষত এখনও শুকোয়নি, তার মধ্যেই পিরোজপুরের ডুমরিতলা গ্রামে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর এক ভয়াবহ হামলার অভিযোগ সামনে এল। শনিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করল সাহা পরিবারের স্বপ্ন ও মাথা গোঁজার ঠাঁই। ঘটনার ভয়াবহতা এবং বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের বিস্ফোরক পোস্ট ঘিরে এখন দুই বাংলার রাজনীতি তুঙ্গে।

কী ঘটেছিল সেই অভিশপ্ত ভোরে?

শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫। পিরোজপুর সদর উপজেলার পশ্চিম ডুমরিতলা গ্রামের মানুষ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, ঠিক তখন ভোর সাড়ে ৬টা নাগাদ দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে সাহা পরিবারের বাড়িগুলো। পলাশ কান্তি সাহা, শিব সাহা ও দীপক সাহাদের তিনটি বসতবাড়ি মুহূর্তের মধ্যে ভস্মীভূত হয়ে যায়।

পরিবারের বয়স্ক সদস্য সন্ধ্যা সাহা প্রাতঃকর্ম সেরে ফিরে এসে প্রথম আগুন দেখতে পান। তাঁর চিৎকারেই গ্রামবাসী ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে আগুনের গ্রাসে চলে গেছে আসবাবপত্র থেকে শুরু করে জরুরি নথিপত্র। দমকল বাহিনী পৌঁছানোর আগেই সব শেষ। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা যুগল বিশ্বাস জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও রহস্যাবৃত, তবে তদন্ত চলছে।

অমিত মালব্যের বিস্ফোরক দাবি: ‘তালাবন্দি করে পোড়ানোর চেষ্টা’

এই ঘটনা নিয়ে ওপার বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে উত্তাপ পৌঁছেছে কলকাতায়। বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (X) এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, এটি কোনো সাধারণ অগ্নিকাণ্ড নয়, বরং সুপরিকল্পিত হামলা।

মালব্য দাবি করেছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে ইসলামি মৌলবাদীরা পলাশ কান্তি সাহাকে তাঁর বাড়ির ভেতরে তালাবন্দি করে রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা নিয়ে। তাঁর মতে, বাংলাদেশে হিন্দুদের বেছে বেছে নিশানা করা হচ্ছে, যা চরম উদ্বেগজনক।


পশ্চিমবঙ্গের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন:

পিরোজপুরের এই আগুনের আঁচ অমিত মালব্য টেনে এনেছেন এপার বাংলাতেও। মালদা ও মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রসঙ্গ টেনে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীরবতাকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তাঁর প্রশ্ন, যদি ধর্মের কারণে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে বারবার আক্রমণ করা হয়, তবে প্রশাসন বা আন্তর্জাতিক মহল কেন নিশ্চুপ? কেন সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা মুখ্যমন্ত্রী এই বর্বরতা নিয়ে কোনো কড়া বার্তা দিচ্ছেন না?

আতঙ্কে দিন কাটছে সংখ্যালঘুদের:

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দু'বছর আগেও একই এলাকায় রহস্যজনকভাবে আগুন লেগেছিল। বারবার কেন সংখ্যালঘু পরিবারগুলোকেই আগুনের গ্রাসে পড়তে হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ জমছে। প্রাণভয় আর নিরাপত্তাহীনতা এখন পিরোজপুরের ডুমরিতলা গ্রামের প্রতিটি হিন্দু পরিবারের নিত্যসঙ্গী।

ওপার বাংলায় যখন সাহা বাড়ির ছাইয়ের স্তূপে কান্নার রোল উঠছে, তখন এপার বাংলার রাজনীতিতে সেই আগুনের তাপ নতুন কোনো মেরুকরণ ঘটায় কি না, সেটাই এখন দেখার।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code