"থানার ইট খুলে নেব!" পুলিশি অতিসক্রিয়তায় রণংদেহী হুমায়ুন, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে দ্বারস্থ হচ্ছেন হাই কোর্টে
- "পুলিশের ওপর আস্থা নেই! মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে 'নজরদারি'র অভিযোগে এবার হাই কোর্টে হুমায়ুন কবীর"
- পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ হুমায়ুন কবীরের। মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পুলিশের নজরদারি এবং ছেলের গ্রেফতারি নিয়ে কেন উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ? জানুন বিস্তারিত........
নিজস্ব প্রতিবেদন, মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদের রাজনীতির ‘বেতাজ বাদশা’ হতে চাওয়া হুমায়ুন কবীর এখন কার্যত খড়্গহস্ত। নিজের নতুন দল 'জনতা উন্নয়ন পার্টি' (JUP) গড়ার পর থেকেই শাসকদল এবং পুলিশের সাথে তাঁর সংঘাত তুঙ্গে উঠেছে। ছেলের আটক হওয়া এবং মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পুলিশের ‘নজরদারি’র অভিযোগে এবার সরাসরি যুদ্ধের ডাক দিলেন ভরতপুরের বিধায়ক। সাফ জানিয়ে দিলেন, রাজ্য পুলিশের ওপর আর তাঁর ভরসা নেই, এবার তিনি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দরজায় কড়া নাড়তে চলেছেন।
১. "পুলিশ মারলে কি রসগোল্লা খাওয়াব?"
রবিবার নিজের অফিসঘরেই নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন হুমায়ুন এবং তাঁর পুত্র গোলাম নবি আজাদ। সেই ঘটনার রেশ টেনে সোমবার হুমায়ুন বলেন, "পুলিশ যদি গায়ে হাত তোলে, তবে কি আমি তাদের মিষ্টি খাওয়াব? ওই নিরাপত্তারক্ষী ঠিকমতো কাজ করেন না, সবসময় মোবাইল ঘাঁটেন।" ছেলের গ্রেফতারি এবং সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর মুক্তি পাওয়া নিয়ে হুমায়ুনের দাবি, এসবই শাসকদলের নির্দেশে তাঁকে হেনস্থা করার একটি পরিকল্পিত ছক। তিনি আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ এখন তাঁর মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সামনে গিয়ে ছবি তুলছে এবং তাঁর জামাইকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। ক্ষুব্ধ বিধায়কের হুঁশিয়ারি— "আমার জামাইয়ের গায়ে যদি পুলিশ হাত দেয়, তবে ওই থানার ইট আমি খুলে নেব!"
"Mamata Banerjee's Police took action against me and family as I am building Babri masjid in Murshidabad."
— News Arena India (@NewsArenaIndia) December 29, 2025
- JUP Chief Humayun Kabir pic.twitter.com/Ps9RHdSnHG
#WATCH | Kolkata | On the detention of his son, Jan Unnayan Party Chief Humayun Kabir says, "It was a small incident that my PSO Jumma Khan barged suddenly into my office in the morning while I was talking to my son and asked for leave to go home. We asked him to go outside...… pic.twitter.com/b2AmTkdcwB
— ANI (@ANI) December 29, 2025
২. কেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার দাবি?
তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর থেকেই হুমায়ুন কবীর আশঙ্কা করেছিলেন যে তাঁর নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে বিধায়ক হিসেবে তিনি তিনজন কনস্টেবল পেলেও তাঁর দাবি, এই পুলিশকর্মীরা নিরাপত্তার চেয়ে তাঁর ওপর নজরদারি করতেই বেশি ব্যস্ত।
হুমায়ুনের অভিযোগ: ভিড়ের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা দূরে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং তাঁদের গতিবিধি সন্দেহজনক।
সিদ্ধান্ত: রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা হারিয়ে তিনি এখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) নিরাপত্তা পেতে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে হায়দরাবাদ থেকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর এটাই তাঁর শেষ বিকল্প।
৩. ছেলের সাফাই: "আমি মারধর করিনি"
হুমায়ুন-পুত্র গোলাম নবি আজাদ ওরফে সোহেল জানিয়েছেন, তিনি গোলমাল মেটাতে গিয়েছিলেন মাত্র। তাঁর কথায়, "বাবার সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীর চিৎকার শুনে আমি অফিসঘরে যাই। আমি পুলিশের গায়ে হাত তুলিনি, বরং ওই পুলিশকর্মীই আমার ওপর চড়াও হয়েছিলেন।" বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
৪. ২০২৬-এর আগে নয়া মোড়
রাজনৈতিক মহলের মতে, হুমায়ুন কবীর নিজেকে একজন 'ভিক্টিম' বা শিকার হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। পুলিশি নিগ্রহের এই বয়ান মুর্শিদাবাদের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে তাঁর প্রতি সহানুভূতি তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়ার চেষ্টা করে তিনি কার্যত রাজ্য প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করলেন, যা প্রকারান্তরে বিজেপি-র সুরেই সুর মেলানো।
Tags- হুমায়ুন কবীর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা, জনতা উন্নয়ন পার্টি, মুর্শিদাবাদ রাজনীতি খবর, ভরতপুর বিধায়ক পুলিশ বিতর্ক, কলকাতা হাই কোর্ট নিউজ।

0 মন্তব্যসমূহ