আপনি কি পাকিস্তানের নেতা ? রাহুলকে প্রশ্ন বিজেপির ? দেশপ্রেম না 'পাকিস্তান' প্রেম? নেহরু-গান্ধী পরিবারের ভারত-বিরোধী চক্রান্তের নতুন অধ্যায়!
সম্পাদকীয় , প্রবীর রায় চৌধুরী :
ভারতের OPERATIO SINDOOR , আর 'যুবরাজ'-এর মুখে 'পাক-স্তুতি'! দেশপ্রেমের নামে তামাশা
ভারতের মাটি থেকে যখন সন্ত্রাসবাদীদের খতম করার হুঙ্কার উঠছে, যখন আমাদের বীর জওয়ানরা 'অপারেশন সিন্দুর'-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে দাঁতভাঙা জবাব দিচ্ছে, ঠিক তখনই দেশের তথাকথিত 'বিরোধী নেতা' রাহুল গান্ধীর সুর যেন 'নবাব-এ-পাকিস্তান' হয়ে উঠছে! এ কেমন দেশপ্রেম? নাকি সেই পুরোনো নেহরু-গান্ধী পরিবারের দেশভাগের পাপের নতুন সংস্করণ?
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া সপাটে রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে বলেছেন, "আপনি কি বিরোধী দলের নেতা, নাকি 'নিশান-এ-পাকিস্তান'?" এই প্রশ্ন কিন্তু শুধু ভাটিয়ার নয়, এ প্রশ্ন আজ ১৪০ কোটি ভারতবাসীর। যখন আমাদের সেনাবাহিনী চরম পরাক্রম দেখাচ্ছে, তখন রাহুল গান্ধী ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাহসকে ছোট করে দেখাচ্ছেন এবং দেশের সুরক্ষাকে বিপদে ফেলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভাটিয়ার স্পষ্ট অভিযোগ, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিয়ে কংগ্রেস নেতার মন্তব্যগুলো ইসলামাবাদ ভারতের বদনাম করার জন্য ব্যবহার করছে। অর্থাৎ, রাহুল গান্ধী কি অজান্তেই পাকিস্তানের হাতের পুতুল হয়ে উঠছেন? নাকি জেনেবুঝেই এই ভারত-বিরোধী এজেন্ডা চালাচ্ছেন?
'শহজাদা'র ভণ্ডামি!
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে বলেন, "মোদিজি, ফাঁকা বুলি আওড়ানো বন্ধ করুন। শুধু বলুন, সন্ত্রাসবাদের ইস্যুতে আপনি পাকিস্তানের কথা কেন বিশ্বাস করলেন? ট্রাম্পের সামনে নতজানু হয়ে ভারতের স্বার্থ কেন বলি দিলেন? আর আপনার রক্ত শুধু ক্যামেরার সামনেই কেন গরম হয়?"
कांग्रेस @INCIndia ने पढ़ना छोड़ दिया है इस समझौते के ऑरटिकल 14 के अनुसार यह समझौता 19 अगस्त 1992 को दिल्ली में मीटिंग कर रेटिफाई किया गया जो मेरे ट्वीट के पेज नम्बर 2 पर लिखा है ।1992/ में कॉंग्रेस की सरकार थी या नहीं https://t.co/k8qtvMojbw
— Dr Nishikant Dubey (@nishikant_dubey) May 23, 2025
এই কথার জবাবে গৌরব ভাটিয়া রাহুল গান্ধীকে সরাসরি বলেছেন, "রাহুল গান্ধী, আমাদের সাহসী সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব ও প্রতিশ্রুতির অবমাননা করা বন্ধ করুন, এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা বন্ধ করুন যা করা উচিত নয়। তিনি জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপদে ফেলছেন।" ভাটিয়ার অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে এমন প্রশ্ন করা, এবং আমাদের দেশের শত্রু দেশগুলির এজেন্ডা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া রাহুল গান্ধীর মূল চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু কেন এই প্রশ্ন? কেন রাহুল গান্ধী বার বার পাকিস্তানের পক্ষ নিচ্ছেন? ইতিহাস ফিরে দেখলে এর উত্তর স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেই ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগ থেকে শুরু করে কাশ্মীর সমস্যার মূল, প্রতিটি ক্ষেত্রেই নেহরু-গান্ধী পরিবারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এই পরিবার বরাবরই ভারতের জাতীয় স্বার্থের চেয়ে নিজেদের ক্ষমতা এবং 'পাক-ভোট ব্যাংক'কে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যার ফল আজও দেশ ভোগ করছে।
১৯৯১-এর 'বিশ্বাসঘাতকতা' এবং বর্তমানের 'দুষ্টচক্র'
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে রাহুল গান্ধীর ভণ্ডামি আরও একবার উন্মোচন করেছেন। তিনি ১৯৯১ সালের ভারত-পাক সামরিক স্বচ্ছতা চুক্তির কথা উল্লেখ করে কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন। দুবের প্রশ্ন, "রাহুল গান্ধী জি, এটা আপনার সরকারের সময় করা চুক্তি। ১৯৯১ সালে, আপনার দল-সমর্থিত সরকার একটি চুক্তি করেছিল যে ভারত এবং পাকিস্তান যেকোনো আক্রমণ বা সেনা চলাচল সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করবে। এই চুক্তি কি বিশ্বাসঘাতকতা নয়?"
তিনি আরও যোগ করেছেন, "কংগ্রেস পাকিস্তানের ভোটব্যাঙ্কের সাথে হাত মিলিয়েছে, বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর জি সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করা কি আপনার জন্য উপযুক্ত?" দুবে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে বলেছেন, "১৯৪৭ সাল থেকে আমরা পাকিস্তানকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বলে মনে করি, আমরা ৭৮ বছর ধরে কাশ্মীর ইস্যুতে তাদের সাথে লড়ছি এবং কাশ্মীরের আমাদের অংশ পাকিস্তান দখল করে রেখেছে। এমনকি তার পরেও, আপনারা (কংগ্রেস) পাকিস্তানকে ছাড় দিয়ে যাচ্ছেন। ১৯৫০ সালের নেহরু-লিয়াকত চুক্তি হোক, সিন্ধু জল চুক্তি হোক, ১৯৭৫ সালের সিমলা চুক্তি হোক।"
নিশিকান্ত দুবের দাবি, ১৯৯১ সালে যখন চন্দ্র শেখর-নেতৃত্বাধীন সরকারকে কংগ্রেস সমর্থন করছিল এবং ১৯৯৪ সালে যখন পি. ভি. নরসিমা রাওয়ের সরকার ছিল, তখন এই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছিল এবং সেখানে লেখা হয়েছিল যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী কোথায় মোতায়েন করা হবে এবং বিমান বাহিনী কীভাবে কাজ করবে। দুবের প্রশ্ন, "এই সবকিছুই কি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল নয়? কংগ্রেস শুধু ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য দেশকে ঠকিয়েছে… ভারত একটি বিশ্বাসঘাতকতার মামলা শুরু করবে এবং যারা এই চুক্তি করেছে এবং কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা উচিত।"
যদিও কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে, ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস চন্দ্রশেখর সরকারের সমর্থন তুলে নিয়েছিল এবং দশম লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস তো আর মিথ্যে হয় না।
অপারেশন সিন্দুর: ভারতের কঠোর বার্তা
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পাহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ৭ মে 'অপারেশন সিন্দুর' শুরু হয়েছিল। এর লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর (PoJK)-এর সন্ত্রাসী অবকাঠামো, যার ফলে ১০০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় শেলিং করে এবং ড্রোন হামলা চালায়, যার ফলে ভারত ১১টি পাকিস্তানি বিমানঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়। ১০ মে উভয় দেশ শত্রুতা বন্ধ করতে সম্মত হয়।
ভারতের এই চরম পরাক্রমের সময়ে, যখন আমাদের সেনাবাহিনী দেশের সম্মান রক্ষায় জীবন বাজি রাখছে, তখন রাহুল গান্ধীর এই ধরনের মন্তব্য কেবল তাঁর রাজনৈতিক অপরিণামদর্শিতাই প্রকাশ করে না, বরং দেশের সুরক্ষাকেই দুর্বল করে তোলে। প্রশ্ন হলো, রাহুল গান্ধী কার এজেন্ডা চালাচ্ছেন? তিনি কি সত্যিই দেশের বিরোধী দলের নেতা, নাকি পাকিস্তানের 'নবাব'-এর মতো আচরণ করছেন? এই প্রশ্নের উত্তর আজ দেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিক জানতে চায়। নেহরু-গান্ধী পরিবারের ভারত ভাগের পাপ কি আজও রাহুলের মাধ্যমে দেশের সর্বনাশ চাইছে? সময়ই এর জবাব দেবে!
0 মন্তব্যসমূহ