মানুষের ভাষা | ৬ জুন, ২০২৫
বিশ্ব মঞ্চে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান আরও এক ধাপ এগোল। কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এই মাসে কানানাস্কিসে অনুষ্ঠিত হতে চলা G7 সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি জানিয়েছেন, তিনি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য মুখিয়ে আছেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নির সঙ্গে সাক্ষাতে আশাবাদী।
শুক্রবার এক্স (X)-এ পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী মোদি লেখেন,
"কানাডার প্রধানমন্ত্রী @MarkJCarney-এর ফোনকল পেয়ে আনন্দিত। তাঁকে নির্বাচনী জয়ে অভিনন্দন জানালাম এবং এই মাসের শেষের দিকে কানানাস্কিসে অনুষ্ঠিতব্য G7 সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানালাম। জনগণের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধে বিশ্বাস রেখে ভারত ও কানাডা একসাথে নতুন উদ্যমে কাজ করবে। সম্মেলনে আমাদের সাক্ষাতের অপেক্ষায় রয়েছি।"
>Glad to receive a call from Prime Minister @MarkJCarney of Canada. Congratulated him on his recent election victory and thanked him for the invitation to the G7 Summit in Kananaskis later this month. As vibrant democracies bound by deep people-to-people ties, India and Canada…
— Narendra Modi (@narendramodi) June 6, 2025
এই আমন্ত্রণ ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচক বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সময় ভারত-কানাডা সম্পর্ক চরম খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ২০২৩ সালে ট্রুডো কানাডার পার্লামেন্টে কোনো প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেছিলেন, ভারতীয় গোয়েন্দারা খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডে জড়িত। ভারত সেই দাবি বারবার অস্বীকার করেছে এবং কানাডা আজও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ তুলে ধরতে পারেনি।
পরের বছর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যখন কানাডা ভারতের হাই কমিশনারকে “Person of Interest” হিসেবে চিহ্নিত করে। ভারত এই অভিযোগকে “অযৌক্তিক” বলে প্রত্যাখ্যান করে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কানাডার ৬ জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করে।
তবে পরিস্থিতির বদল আসে ২০২৫ সালে, যখন জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগ করেন এবং মার্ক কার্নি কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। যদিও তিনি একই লিবারেল পার্টির সদস্য, তবুও ভারত-কানাডা সম্পর্ককে তিনি “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ” বলে ব্যাখ্যা করেন এবং দ্বিপাক্ষিক মতপার্থক্য মিটিয়ে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার বার্তা দেন।
এই প্রেক্ষাপটে G7 সম্মেলনের আমন্ত্রণ শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, বরং কানাডার মাটিতে খলিস্তানি সমর্থকদের জন্যও একটি কড়া বার্তা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, G7 সম্মেলনটি জুন ১৫ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত কানাডার কানানাস্কিসে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জল্পনা চলছিল, মোদি আমন্ত্রিত হবেন কিনা। কারণ অনেকেই মনে করেছিলেন, সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতিতে হয়তো ভারত এমন সম্মেলনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবে।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং অংশগ্রহণের সম্ভাবনা স্পষ্ট করেছে, ভারত কূটনৈতিক আলোচনায় আগ্রহী এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
0 মন্তব্যসমূহ