মানুষের ভাষা ওয়েবডেস্ক
কলকাতা, ৩১ জুলাই: প্রায় তিন মাস আগে অনুষ্ঠিত পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশন (WBJEE) 2025-এর ফলাফল আগামী ৭ আগস্ট প্রকাশিত হতে পারে বলে ঘোষণা করল বোর্ড। রাজ্য সরকারের নবনির্ধারিত ওবিসি (OBC) উপবর্গ সংক্রান্ত আইনি জটিলতার কারণেই এই দেরি বলে জানিয়েছে বোর্ড।
বোর্ডের চেয়ারপার্সন সোনালি চক্রবর্তী ব্যানার্জি বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “পরীক্ষা হয়েছিল ২৭ এপ্রিল। স্বাভাবিকভাবে ৫ জুনের মধ্যেই ফল প্রকাশের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত মামলার কারণে ফল প্রকাশ থমকে যায়।”
সামাজিক শ্রেণী তথ্য জমার সময়সীমা ২ আগস্ট পর্যন্ত
৩০ জুলাই রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে জারি হওয়া এক নির্দেশিকা অনুযায়ী, WBJEE বোর্ড পরীক্ষার্থীদের ৩১ জুলাই থেকে ২ আগস্ট রাত ১১:৫৯ মিনিটের মধ্যে তাদের সামাজিক শ্রেণিশ্রেণি (Social Category) সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে হালনাগাদ করার নির্দেশ দিয়েছে। পরীক্ষার্থীদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমেও এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,
বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, এই তথ্য জমা শুধুমাত্র WBJEE-এর অফিশিয়াল পোর্টালে নির্দিষ্ট লিঙ্কের মাধ্যমে করা যাবে। চূড়ান্ত যাচাই হবে ভর্তি প্রক্রিয়ার সময় সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।
বোর্ড আরও জানিয়েছে, “এই ফল প্রকাশ এবং পরবর্তী সিদ্ধান্তসমূহ এখনো আদালতের চূড়ান্ত রায়ের উপর নির্ভরশীল।”
আদালতের নজরে WBJEE ফল প্রকাশে দেরি
২৯ জুলাই, কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্য সরকার ও WBJEE বোর্ডকে যে তারা ৭ আগস্টের মধ্যে শপথপত্র জমা দিয়ে ফল প্রকাশে বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি সুজয় পালের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করছে, যেখানে এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক ফলাফল না পাওয়ার কারণে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার ৬৪টি ওবিসি উপবর্গ বাড়িয়ে ১৪০টি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তে প্রথমে কলকাতা হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ জারি করে, পরে ২৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের স্থগিতাদেশের উপরও স্থগিতাদেশ জারি করে, ফলে জটিলতা আরও বাড়ে।
ফলপ্রকাশে দেরির জেরে ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত
WBJEE-র ফলপ্রকাশ বিলম্বিত হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১০০টি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ১০টি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং যাদবপুর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ২টি রাজ্য সহায়তা প্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে।
পরীক্ষার্থীরা ও অভিভাবক মহল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও সামাজিক শ্রেণী তথ্য সংশোধনের নির্ধারিত সময়সীমা অত্যন্ত কম বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। শিক্ষা মহলের দাবি, দ্রুত ফল প্রকাশ করে যাতে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
0 মন্তব্যসমূহ