Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Recent in Home

Suvendu Adhikari : শিয়ালদায় শোরগোল ! রেলের জায়গায় মমতার পুলিশ কেন ? চাকরিহারাদের পুলিশের মার থেকে বাঁচাতে শিয়ালদায় শুভেন্দু

 শিয়ালদহ স্টেশনে ধুন্ধুমার: শিক্ষকদের উপর কলকাতা পুলিশের হামলায় সরব শুভেন্দু অধিকারী, রেলের পরিসরে মমতার পুলিশ কেন?


মানুষের ভাষা, কলকাতা, ২৯ মে: 

আজ শিয়ালদহ রেল স্টেশনে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর কলকাতা পুলিশের অতর্কিত হামলায় রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানান রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রেলের সম্পত্তি, যা কেন্দ্রীয় সরকারের এখতিয়ারভুক্ত, সেখানে কলকাতা পুলিশের প্রবেশ এবং আন্দোলনকারীদের উপর লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা করে তিনি পুলিশের ভূমিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।


ঘটনার সূত্রপাত: রেলের পরিসরে কলকাতা পুলিশের প্রবেশ

সকাল থেকেই শিয়ালদহ স্টেশনে শিক্ষক প্রার্থীরা তাঁদের দীর্ঘদিনের বকেয়া দাবিদাওয়া নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতা পুলিশের একটি বিশাল বাহিনী রেলের পরিসরে প্রবেশ করে এবং আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়। এই ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তাঁরা দিগ্ব্বিদিক ছুটতে শুরু করেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ আন্দোলনকারীদের মারধর করছে, টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই সময় শুভেন্দু অধিকারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং কলকাতা পুলিশের এই বেআইনি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হন।

শুভেন্দু অধিকারীর কড়া প্রতিবাদ: 'মমতা পুলিশ হায় হায়' স্লোগান

ঘটনার পরপরই শুভেন্দু অধিকারী শিয়ালদহ স্টেশনের ডিআরএম (ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার) অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক ও কর্মীরা। তিনি কলকাতা পুলিশের এই কার্যক্রমকে সম্পূর্ণ বেআইনি আখ্যা দিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলেন, "কলকাতা পুলিশ রেল স্টেশনে ঢুকলো কেন?" স্লোগান ওঠে, "মমতা পুলিশ হায় হায়", "রেল স্টেশনের শিক্ষকদের মারলে কেন, জবাব চাই, জবাব দাও"।


শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, রেলের প্রাঙ্গণ কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তি এবং এখানে কলকাতা পুলিশের সরাসরি প্রবেশাধিকার নেই। যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে জিআরপি (গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ)-এর আরপিএফ (রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুমতি নিতে হয়। ডিআরএম-এর সঙ্গে কথা বলার পর শুভেন্দু অধিকারী জানান, ডিআরএম নিজেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন এবং আরপিএফ অফিসার এন কে সিং স্বীকার করেছেন যে কলকাতা পুলিশের প্রবেশের জন্য কোনো পূর্বানুমতি বা যোগাযোগ ছিল না। অর্থাৎ, পুরো বিষয়টিই "অবৈধ" এবং "অপ্রত্যাশিত"।


মহিলা আন্দোলনকারীদের উপর পুরুষ পুলিশ: শুভেন্দুর ক্ষোভ

শুভেন্দু অধিকারী বিশেষত মহিলা আন্দোলনকারীদের উপর পুরুষ পুলিশের দ্বারা ধাক্কাধাক্কি এবং টানাটানির তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, "শুধুমাত্র শিক্ষকদের শিক্ষাকর্মীদের উপর নয়, মহিলাদের উপরে যেভাবে পুরুষ পুলিশ দিয়ে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে, টানাটানি করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ আমাদের থাকলো।" তিনি রেল কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান এবং হুঁশিয়ারি দেন যে, যদি আজকের মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে তিনি কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করবেন।


'কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো সম্পত্তি মমতার পুলিশকে ব্যবহার করতে দেব না'

শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, "কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো সম্পত্তি মমতার পুলিশকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।" তিনি অভিযোগ করেন, মমতা পুলিশ শুধু আন্দোলনকারীদের উপর অত্যাচার করছে না, শাসকদলের মদতে এই পুলিশ বেআইনি কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এর আগেও তাঁকে ৮৪ বার হাইকোর্টে যেতে হয়েছে হনুমান জয়ন্তী, হোলি, সরস্বতী পূজোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আন্দোলনের অধিকার রক্ষার জন্য।


তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, কলকাতা পুলিশ মূলত সিএএ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন)-এর আবেদনকারী বা সিএএ সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হিন্দুদের, যারা মেডিকেল কারণে বা আত্মীয়দের বাড়িতে আসছেন, তাদের বনগাঁ, রানাঘাট, গেদে স্টেশনগুলোতে টার্গেট করে হয়রানি করছে। তাঁর কথায়, "এরা এদের কাছে রোহিঙ্গা মুসলমানরা হচ্ছে জামাই দামাত আর হিন্দু শরণার্থীরা হচ্ছে এদের শত্রু চোখের বালি।"


ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী রেল কর্তৃপক্ষকে দোষী পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ডিআরএম তাঁকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Comments

Ad Code