মানুষের ভাষা ডেস্ক | ৩ জুন ২০২৫
পাঞ্জাব পুলিশ এক চাঞ্চল্যকর গুপ্তচরচক্র ফাঁস করে দিয়েছে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং খালিস্তানি জঙ্গি গোপাল সিং চাওলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকা এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত গগনদীপ সিং ভারতের সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য, বিশেষ করে অপারেশন সিন্দুর চলাকালীন সেনা গতিবিধি, পাকিস্তানি এজেন্টদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
পাঞ্জাব পুলিশের ডিজি গৌরব যাদব মঙ্গলবার জানান, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গত পাঁচ বছর ধরে গগনদীপ সিং পাকিস্তানভিত্তিক খালিস্তানি জঙ্গি গোপাল সিং চাওলার সংস্পর্শে ছিলেন। চাওলার মাধ্যমেই তাঁর সঙ্গে আইএসআই-এর যোগাযোগ তৈরি হয়। তিনি ভারতীয় চ্যানেলের মাধ্যমে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের কাছ থেকে অর্থও পেয়েছেন।”
আরো পড়ুন: OPERATION SINDOOR: ‘অপারেশন সিঁদুর কেবল শুরু’: মোদির হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে – নতুন ভারতের গর্জন
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্তের ফোন থেকে সেনাবাহিনীর গোপন তথ্যের প্রমাণ মিলেছে। তার মোবাইল ফোনে ২০টিরও বেশি আইএসআই এজেন্টের নম্বর এবং বার্তালাপ পাওয়া গিয়েছে। সেনা মোতায়েন, কৌশলগত অবস্থান এবং অপারেশন সংক্রান্ত বেশ কিছু গোপন নথি পাচার হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, গোপাল সিং চাওলা, যিনি বর্তমানে পাকিস্তানে রয়েছেন, সেখানে বসেই আইএসআই-এর সহায়তায় ভারতে গুপ্তচরচক্র চালাচ্ছেন। পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের পালটা অভিযান ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময়ও তিনি সক্রিয়ভাবে গুপ্তচর কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন। উল্লেখ্য, চাওলার সঙ্গে লস্কর-ই-তইবা প্রধান হাফিজ সাঈদের ছবিও রয়েছে, যা তাঁর জঙ্গি যোগসূত্র প্রমাণ করে।
এই গ্রেপ্তারি সাম্প্রতিক পহেলগাঁও হামলার পর গুপ্তচর বিরোধী অভিযানে আরও গতি এনেছে। পহেলগাঁও হামলায় পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিরা ২৬ জনকে হত্যা করে। তারপর থেকেই উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আইএসআই-র হয়ে কাজ করা সন্দেহে এক ডজনেরও বেশি ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এই চক্রে জড়িত থাকা আরও কয়েকজনের নাম সামনে এসেছে — হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা, যার ৩.৭৭ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার এবং ১.৩৩ লক্ষ ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ার রয়েছে; পাঞ্জাবের ৩১ বছর বয়সী গুজালা এবং আরও এক CRPF কর্মী। বর্তমানে তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে।
পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, এই গোয়েন্দা চক্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দুর্বল করা ও সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহ দেওয়া। আর্থিক লেনদেন ও প্রযুক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে চক্রটির গোটা নেটওয়ার্ক উন্মোচনের চেষ্টা চলছে।
0 মন্তব্যসমূহ